চারিদিকে শুধু হাহাকার আর মৃত্যু। ছবি— রয়টার্স।
২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও জ্বলছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেনার ডিপোর আগুন। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জেন ইলিয়াছ চৌধুরী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বহু মৃতদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। সোমবার থেকে ডিএনএ পরীক্ষা শুরু হবে। আগুনের কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলিকে ছাপিয়ে উঠছে স্বজন হারানোর হাহাকার। এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, আগুন দেখে ডিপো থেকে বেরোনোর দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষী। প্রশ্ন উঠছে, দরজা দিয়ে বেরোতে না পেরেই কি ঝলসে এত মানুষের মৃত্যু হল?
চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক জাওয়াদ হোসাইন আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, কয়েকটি কন্টেনারে এখনও আগুন জ্বলছে। নিরাপদ দূরত্ব থেকে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। দমকল আধিকারিকদের ধারণা, তরল রাসায়নিক কন্টেনারের ভিতর থেকে চুঁইয়ে বেরিয়ে আগুনের সংস্পর্শে আসছে। তাই আগুন এখনও বিপজ্জনক অবস্থাতে রয়েছে। জাওয়াদ আরও জানিয়েছেন, আগুন রাসায়নিকের কন্টেনার থেকে পোশাক ভরা কন্টেনারেও ছড়িয়েছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ডিপোতে আগুন লাগার সময় পকেট গেট বন্ধ ছিল বলে দাবি করেছেন বেঁচে ফেরা কয়েক জন শ্রমিক। তাঁদের অভিযোগ, ডিপোর দক্ষিণ দিকের পকেট গেটটি তালা বন্ধ করে পালিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষী। ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ডিপোতে আগুনের দাপট বৃদ্ধি পেতেই শ্রমিকরা দক্ষিণ দিকের দরজা দিয়ে বেরনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাইরে তালা লাগিয়ে নিরাপত্তারক্ষী পালিয়ে যাওয়ায় কোনও শ্রমিক ভিতর থেকে বেরোতে পারেননি। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, গেট বন্ধ করে নিরাপত্তারক্ষী পালিয়ে যাওয়াতেই কি বহু মানুষকে ঝলসে পুড়ে মরতে হল? ওই প্রতিবেদনেই এক শ্রমিককে উদ্ধৃত করে উল্লেখ করা হয়েছে, বিস্ফোরণের অভিঘাতে দরজাটি ভেঙে পড়ে। সেখান দিয়েই তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন। যদিও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
এ দিকে অগ্নিকাণ্ডে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, ১০ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা আর্থিক সহায়তা-সহ তাঁদের পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে। যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের ছ’লক্ষ বাংলাদেশি টাকা ক্ষতিপূরণ-সহ চাকরি দেওয়া হবে। বিএম কন্টেনার ডিপো বিবৃতি জারি করে এ কথা জানিয়েছে।