শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।
বছর ঘুরে গেলেও তাইওয়ানের বিরুদ্ধে রণংদেহী মনোভাবে বদল আনেনি চিন। বরং নতুন করে ওই ‘দ্বীপরাষ্ট্রের’ বিরুদ্ধে বেজিং সামরিক প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে একাধিক পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি। তাইওয়ান প্রণালী-সহ দক্ষিণ চিন সাগরের বিভিন্ন অংশে চিনা রণতরীর পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ডুবোজাহাজের নতুন করে ‘তৎপরতার’ অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। সেই সঙ্গে উঠেছে, চিনা যুদ্ধবিমানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগও।
তাইওয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, সোমবার সকাল থেকে শতাধিক বার চিনা বোমারু বিমান জেএইচ-৭, এবং যুদ্ধবিমান সুখোই-৩০ আর জে-১১ তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বনির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করে তাদের আকাশসীমায় অনুপ্রদেশ করে। কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত একদলীয় চিনের ফৌজ প্ররোচনামূলক পদক্ষেপ হিসাবেই এই শক্তিপ্রদর্শন করছে বলে তাইপেইয়ের অভিযোগ। বস্তুত, সেই আশঙ্কা উস্কে দিয়ে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মঙ্গলবার জানিয়েছে, ‘এক চিন নীতি’র অঙ্গ হিসাবেই তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে বেজিং বদ্ধপরিকর।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অগস্টে চিনের আপত্তি খারিজ করে আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। সে সময় ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে শুরু করে চিনা যুদ্ধবিমান। চিন-তাইওয়ান সঙ্কটের আবহে সে সময় আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকেছিল। উত্তেজনার আবহে আমেরিকার নৌবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ক্রুজার ইউএসএস অ্যান্টিয়েটাম এবং ইউএসএস চ্যান্সেলরসভিলের সেই উপস্থিতি নিয়ে সে সময় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল বেজিং। তা উড়িয়ে দিয়ে পরবর্তী সময়ে তাইওয়ান প্রণালীর অদূরে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস রোনাল্ড রেগন, ডেস্ট্রয়ার গোত্রের রণতরী ইউএসএস হিগিন্স এবং দ্রুত সেনা অবতরণের উপযোগী রণতরী ইউএসএস ত্রিপোলিও মোতায়েন করেছিল পেন্টাগন।
চল্লিশের দশকে চেয়ারম্যান মাও জে দংয়ের নেতৃত্বে চিনে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা দখলের পরে জাতীয়তাবাদ নেকা চিয়াং কাইশেক এবং তাঁর অনুগামীরা ঘাঁটি গেড়েছিলেন তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তার পরে মূলত আমেরিকার সাহায্যে এখনও টিঁকে আছে ‘পৃথক’ তাইওয়ান। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে চিন ক্রমশ আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করে তাইওয়ান দখল করতে চাইছে বলে অভিযোগ।