তাইপেই বিমানবন্দর ছাড়ছেন পেলোসি। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
এক দিনের ঝটিকা সফর সেরে তাইওয়ান ছাড়লেন ন্যান্সি পেলোসি। যাওয়ার আগে সে দেশের রাজধানী তাইপেইতে দাঁড়িয়ে চিনা ফৌজের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস মনে করিয়ে দিলেন আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার।
১৯৮৯ সালের ৪ জুনের রাতে বেজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে ছাত্র-বিক্ষোভ গুঁড়িয়ে দিতে চিনা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’(পিএলএ)-র অভিযানে বহু প্রাণহানি ঘটেছিল। পাঁচের দশক থেকে ধারাবাহিক ভাবে অধিকৃত তিব্বতে অত্যাচার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্ত চিনা ফৌজ। তাইপেইতে সাংবাদিক বৈঠকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন ন্যান্সি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাইপেইতে বুধবার দলাই লামার নেতৃত্বাধীন ‘নির্বাসিত তিব্বত সরকারের’ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে চিনা ফৌজের হামলায় নিহতদের স্মৃতিসৌধেও গিয়েছেন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পরে স্বশাসিত দ্বীপের সরকার এবং জনগণের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমেরিকা স্থিতাবস্থা রক্ষার পক্ষে। আমি তাইওয়ানের প্রতি আমেরিকার সমর্থনের বার্তা দিতে এসেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে যা আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’
চিনা হুঁশিয়ারির মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ চিন সাগর এড়িয়ে তাইপেইয়ের শোংশান বিমানবন্দরে পৌঁছন ন্যান্সি এবং তাঁর সঙ্গীরা। সে সময়ই তাইওয়ানের আকাশসীমায় অন্তত ২০টিরও বেশি চিনা ফাইটার জেট অনুপ্রবেশ করে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর। বেজিং যে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে পারে আমেরিকার সামরিক সূত্রে তার আঁচ মিলেছিল।
মঙ্গলবার রাতে পেলোসিরা মালয়েশিয়া থেকে তাইপেইয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পরেই তাঁদের নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে তাইওয়ানে উড়ে এসেছিল আমেরিকার বিমানবাহিনীর ১৩টি ফাইটার জেটের একটি স্কোয়াড্রন।বুধবারও তাইওয়ান প্রণালী ঘেঁষে চিনা যুদ্ধবিমানের যুদ্ধ মহড়ার খবর এসেছে। অন্য দিকে, জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে তাইওয়ানে উড়ে এসেছে আমেরিকার বিমানবাহিনীর ২২টি ফাইটার জেট। যদিও এই মুহূর্তে তাইওয়ানে আমেরিকা সেনার বড় কোনও বাহিনী নেই। ইতিমধ্যেই তাইওয়ানে ‘সুনির্দিষ্ট হানার’ কথা ঘোষণা করেছে চিন। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ন্যান্সির সফরের পর চাপ বাড়াতে নতুন তৎপরতা শুরু করতে পারে চিনা ফৌজ।