শিনজিয়াংয়ে গণ-আটক শিবির।—ছবি এএফপি।
ফের বেজিংয়ের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াল ফাঁস হয়ে যাওয়া গুচ্ছ সরকারি নথি ‘চায়না কেবলস’। ওই নথি থেকে দিন কয়েক আগে জানা গিয়েছিল, চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের নির্দেশেই শিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুর ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক করে রাখা হয়েছে। ওয়াশিংটন-স্থিত আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন এ বার জানাল, কী ভাবে একটি মোবাইলের একটি শেয়ারিং অ্যাপ দিয়ে ২০১৬ থেকে লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছে উইঘুরদের উপর। ওই চিনা অ্যাপ ‘জ্যাপিয়া’ ব্যবহার করে শুধু কোরান ডাউনলোড বা ধর্মীয় বাণী ইত্যাদি শেয়ার করার জন্যও বহু উইঘুরকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি সাংবাদিকদের।
সংখ্যালঘু উইঘুরদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ বরাবরই উড়িয়ে এসেছে বেজিং। কিন্তু সম্প্রতি যে ৪০০ পাতার সরকারি নথি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে, তাতে স্পষ্ট উইঘুর-বিরোধী অভিযান নিয়ে শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরেই বিস্তর মতভেদ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ‘চায়না কেবলস’ ফাঁসের পিছনে কমিউনিস্ট পার্টির অন্দরের বিরোধী নেতাদের কেউ রয়েছেন।
ফাঁস হয়ে যাওয়া নথি বলছে— চিনের উত্তর-পশ্চিমে উইঘুরদের স্বশাসিত শিনজিয়াং প্রদেশে চিনফিং তাঁর একাধিক সফরে এসে বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাস, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে এ বার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। কাউকে ছাড় নয়।’’ সূত্রের খবর, ২০১৪-য় ওই প্রদেশের এক স্টেশনে জঙ্গি হামলায় ৩১ জনের প্রাণ যায়। এর জন্য উইঘুরদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযানে নামে বেজিং। সাংবাদিক-সংগঠনটির দাবি, ২০১৬-র জুলাই থেকে নানা ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে উইঘুরদের উপরে। যার মধ্যে একটা বড় অস্ত্র ওই জ্যাপিয়া’ শেয়ারিং অ্যাপ। ‘চায়না কেবলস’ থেকে জানা যাচ্ছে, ওই অ্যাপ দিয়ে কেউ কোনও অডিয়ো, ভিডিয়ো শেয়ার করলেই তাঁকে চিহ্নিত করে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনকে।
মুখে কুলুপ এঁটেছে ওই অ্যাপ-নির্মাতা সংস্থাটি। ‘চায়না কেবলস’ নিয়ে বেজিংয়ের বক্তব্য— সবটাই ভুয়ো। শিনজিয়াংয়ে গণ-আটক শিবির নেই বলেও দাবি সরকারের।