China

হংকংকে নিযন্ত্রণে রাখতে নতুন আইন চিনে, ফের বিক্ষোভের আশঙ্কা

বহু বছর ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল হংকং। দু’দশক আগে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় চিনের কাছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ১৮:৪৪
Share:

ফের উত্তেজনা বাড়ছে হংকংয়ে। —ফাইল চিত্র।

স্বশাসিত হংকংয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে এ বার কোমর বেঁধে নেমে পড়ল চিন। বৃহস্পতিবার দেশের আইনসভায় ন্যাশনাল পিপল্‌স কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে নয়া প্রস্তাব পেশ করেছে তারা। তাতে হংকংয়ে নয়া আইন প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে, যার আওতায় রাষ্ট্রদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হংকংয়ে ন্যাশনাল সিকিয়োরিটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

চিনের শীর্ষ নেতৃত্ব যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, কংগ্রেসের বার্ষিক সভায় সাধারণত সেগুলিতে চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়া হয়। এ নিয়ে বেজিংয়ের তরফে সবিস্তার কিছু জানানো হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার কথা মাথায় রেখে, চিন এবং হংকংবাসীর মৌলিক স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রক। তবে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের মতে, এই নয়া আইন হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতায় ইতি টানবে।

বহু বছর ব্রিটেনের উপনিবেশ ছিল হংকং। দু’দশক আগে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় চিনের কাছে। তার পর থেকে স্বশাসিত এই অঞ্চলের মূল কর্তৃত্ব বেজিংয়ের হাতে। তবে চিনের মূল ভূখণ্ডের চেয়ে আরও উচ্চতর গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে হংকংয়ে। যে কারণে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন হংকংবাসী। বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিল, যার আওতায় কিনা বিচারের প্রয়োজনে যে কোনও অপরাধীকে হংকং থেকে চিনে প্রত্যর্পণ করা যায়, তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন ১০ লক্ষ হংকংবাসী।

Advertisement

আরও পড়ুন: করাচিতে লোকালয়ে ভেঙে পড়ল যাত্রিবাহী বিমান, শতাধিক মৃত্যুর আশঙ্কা​

আরও পড়ুন: জামাল খাসোগির ঘাতকদের ক্ষমা করে দিলেন পুত্ররা​

একটানা প্রায় সাত মাস ধরে চলা সেই বিক্ষোভে সমর্থন জানায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভদের সমর্থনে দু’টি বিল পাশ হয় সেখানে, যাতে বলা হয়, হংকংয়ে স্বায়ত্তশাসন যথাযথ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বছরে একবার মার্কিন সেনেটে আলোচনা বসবে। সেইসঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এলে ওয়াশিংটন হংকংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করতে পারবে। এর ফলে শেষ মেশ আর ওই বিল নিয়ে এগোয়নি বেজিং। তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের বিক্ষোভ দানা বাঁধলে, কড়া হাতে তা যাতে দমন করা যায়, তার জন্যই বেজিং নয়া আইনটি আনতে তৎপর হয়েছে বলে ধারণা কূটনৈতিক মহলের।

চিনের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে হংকংয়ের মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। হংকংয়ের নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের মতামত ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করা হতে পারে বলে ধারণা তাঁদের। এর আগে, ২০০৩ সালেও এমনই একটি আইন প্রণয়ন করার চেষ্টা করেছিল বেজিং। তার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। নয়া এই আইনটি ঘিরে ফের একই রকমের বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement