ছবি: সংগৃহীত।
কৌশলগত ভাবে চিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিকিমের সীমান্তের মানচিত্র চূড়ান্ত করার কাজ সবার আগে সেরে ফেলার প্রস্তাব নয়াদিল্লিকে দিল বেজিং। কূটনৈতিক সূত্রে এই কথা জানা গিয়েছে। এই প্রস্তাবটিকে তারা বলছে ‘আর্লি হারভেস্ট’। সম্প্রতি দিল্লিতে ভারত এবং চিনের মধ্যে বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের সীমান্ত বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। পরে চিন যে বিবৃতিটি দেয়, সেখানে সিকিমের কথা সরাসরি না-বলা থাকলেও এই ‘আর্লি হারভেস্ট’-এর বিষয়টি বলা রয়েছে। কিন্তু অজিত ডোভাল বা বিদেশ মন্ত্রকের কেউ বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে রা কাড়েননি। সূত্রের খবর, এই পরামর্শে এখনও পর্যন্ত রাজি নয় সাউথ ব্লক। তারা চায় একসঙ্গে চিন-ভারত সীমান্তের সব ক’টি সেক্টর নিয়েই কথা এগোতে, যাতে সামগ্রিক ভাবে দর-কষাকষির সুযোগ থাকে।
সিকিমের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রয়েছে স্বশাসিত তিব্বত। পূর্বে ভুটান ও পশ্চিমে নেপাল। স্বাভাবিক ভাবেই এখানে সীমান্তের মানচিত্র দ্রুত পাকাপাকি করার বিষয়টিতে চিনের বাড়তি আগ্রহ রয়েছে। সিকিম এবং ভুটান সীমান্তের কাছে ডোকলামে রাস্তা তৈরি করা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে দীর্ঘদিন সংঘাত চলেছে। সিকিমের সীমান্ত সংলগ্ন চাম্বি উপত্যকায় যেমন ভারতীয় সেনার আধিপত্য রয়েছে, অন্য দিকে তেমন রয়েছে ভুটানি সেনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সিকিমের বাতাং লা-র কাছে ভারত-চিন-ভুটানের ত্রিপাক্ষিক সীমান্তে চিনা সেনাবাহিনী বা পিএলএ-র সঙ্গে ভারতীয় সেনার বেশ কয়েক বার টক্কর হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে। এখানে ভূখণ্ডের অধিকার নিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: মায়ানমার-চিন রেল নিয়ে অস্বস্তিতে দিল্লি
সীমান্ত নিয়ে এই মতানৈক্যের মধ্যেই অবশ্য আজ পিএলএ-র পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনার সঙ্গে সম্পর্কের ‘উন্নতি’ ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে এর জন্য ধন্যবাদও দেওয়া হয়েছে চিনা সেনার তরফে। সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র উয়ো কুয়ানের কথায়, ‘‘দুই রাষ্ট্রপ্রধানের প্রয়াসকে ধন্যবাদ। আমাদের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ক্রমশ ভাল হচ্ছে। দু’দেশ কৌশলগত সংলাপ বজায় রেখেছে, একে অন্যকে বাস্তবিক সহযোগিতা করছে। সীমান্তেও আদান-প্রদান বেড়েছে।’’