ফাইল চিত্র
পূর্বাভাস অনুযায়ী একটি ঠান্ডা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্ব। এক দিকে বিশ্বের উন্নত অর্থনৈতিক দেশগুলির জোট জি-৭। অন্য দিকে চিন। সদ্যসমাপ্ত ব্রিটেনের জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের পর এই সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল। এই টানাপড়েনের দিকে সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখছে নয়াদিল্লি। পশ্চিমে চিন-বিরোধিতার বাতাস জোরালো হলে তার ফায়দা তোলাটাই এখন লক্ষ্য ভারতের। কিন্তু তা কিছুটা রেখে ঢেকে। সরাসরি চিন-বিরোধী শিবিরের তকমাও নিজেদের উপরে লাগাতে নারাজ তারা।
জি-৭ বৈঠকের পরে যে বিবৃতিটি দেওয়া হয়েছে সেখানে নাম করেই তোপ দাগা হয়েছে বেজিংয়ের প্রতি। সে দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে ঘোর নিন্দা করা হয়েছে। তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে হংকংয়ে আন্দোলকারীদের উপরে নিপীড়নেরও। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘‘চিনের উচিত মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিবদ্ধতাকে আরও দায়িত্ব সহকারে মেনে চলা।’’
এখানেই শেষ নয়। চিনকে টেক্কা দিতে এ বার তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) বিকল্প হিসেবে একটি আন্তর্জাতিক মহা পরিকাঠামোর পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছে জি-৭। নতুন ওই পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পরিকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি ন্যাটো জোটের নেতাদের বৈঠক শেষে আজ সাংবাদিকদের ন্যাটোর কর্তা জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, ‘‘আমরা একটি নতুন ঠান্ডা যুদ্ধে প্রবেশ করছি না এবং চিন আমাদের প্রতিপক্ষ বা শত্রু নয়। তবে চিনের উত্থান আমাদের নিরাপত্তার জন্য যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে জোট হিসেবে তার মোকাবিলা করা দরকার।’
এক দিন আগেই পশ্চিমের দেশগুলিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিল চিন। আজও জি-৭ নিয়ে গর্জন শোনা গিয়েছে ড্রাগনের। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, কানাডা এবং ইটালির মতো দেশগুলির গোষ্ঠীকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে চিনের দাবি, ‘ছোট একটি গোষ্ঠীর’ তরফে বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। লন্ডনে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেছেন। পাশাপাশি কোভিডের উৎস অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া নিয়েও সরব হয়েছে বেজিং। চিনা দূতাবাস সূত্রে বলা হয়েছে এই কাজটি যেন ‘সুষ্ঠু ভাবে কোনও পক্ষপাত না করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে’ করা হয়। চিনের বক্তব্য, ‘‘অতিমারি এখনও গোটা বিশ্ব জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন এর উৎস খোঁজার বিষয়টি নিয়ে যেন রাজনীতি না করা হয়।’’