(বাঁ দিকে) লস্কর-ই-তৈবা নেতা সাজিদ মির এবং ২৬/১১ মুম্বই হামলা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মুম্বইয়ে ২৬/১১ সন্ত্রাসের অন্যতম চক্রী লস্কর-ই-তৈবা নেতা সাজিদ মিরকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনেছিল ভারত এবং আমেরিকা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াল ভেটো দেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্থায়ী সদস্য চিন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, বেজিংয়ে বাধায় মঙ্গলবার আটকে গিয়েছে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের উদ্যোগ।
প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১২৬৭ অল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’তে পাক জঙ্গি সাজিদকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’ তকমা দিতে বাধা দিয়েছে চিন। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অন্যতম প্রধান ‘চক্রী’ ছিল সাজিদ। ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ হিসাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে সাজিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেত। সেই সঙ্গে বাইরে যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি হত। কিন্তু শি জিনপিং সরকারের বাধায় তা সম্ভব হল না।
প্রসঙ্গত, গত বছরও ‘১২৬৭ অল-কায়দা নিষেধাজ্ঞা কমিটি’র বৈঠকে সাজিদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল চিন। এক সময় লস্কর জঙ্গি সাজিদের মাথার দাম ৫০ লক্ষ ডলার (প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকা) ধার্য করেছিল আমেরিকা। ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএএফটি)-এর ধূসর তালিকা থেকে নিজেদের সরাতে মরিয়া পাকিস্তান ২০২২ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্যের মামলায় সাজিদকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে, মুম্বই হামলায় সাজিদের যোগসাজশের অভিযোগে এখনও পদক্ষেপ করেনি ইসলামাবাদ।
শুধু মুম্বই হামলা নয়, আমেরিকা, আস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ডেনমার্ক এবং ব্রিটেনে একাধিক হামলার পিছনেও সাজিদ জড়িত বলে আমেরিকার গোয়েন্দাদের অভিযোগ। আমেরিকায় বিভিন্ন সময় হামলার সঙ্গে জড়িত সাজিদকে ২০১১ সালের ২১ এপ্রিল আমেরিকার ইলিনয়ের এক আদালতে অভিযুক্ত করা হয়। সেই মামলায় বলা হয়েছিল, ২৬/১১-র ঘটনাতেও বিদেশিদের আটকে রাখার নির্দেশ এসেছিল সাজিদের কাছ থেকে। বন্দিদের হত্যার নির্দেশও সে দিয়েছিল। দীর্ঘ দিন থেকে সাজিদ এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছে।