ক্যামেরা থেকে জুতো, বার্গার থেকে সান্ধ্য পোশাক— এক বার পছন্দ হলেই হল। দুনিয়ার তাবড় ধনীদের নজরে পড়ামাত্র তা বিকোচ্ছে লক্ষ-কোটি টাকায়। পছন্দের জিনিস কিনতে কত অর্থ ব্যয় করছেন তাঁরা?
একটা বার্গারের জন্য কত টাকা খরচ করতে হবে আপনাকে? গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানিয়েছে, সালটা ২০১৭ হলে ২৩১৩.৭২ ডলার খরত হত আপনার। সে বছর ডাচ শেফ দিয়েগোর তৈরি করা বার্গারটিই ছিল সবচেয়ে দামি। এতে ছিল জাপানের ওয়াগু বিফ, গলদা চিংড়ি, হোয়াইট ট্রাফল, ক্যাভিয়ার এবং ২৪ ক্যারাটের সোনার তবক-সহ নানা দুর্মূল্য উপাদান।
মেশিনের সাহায্যে নয়, হাতে তৈরি স্নিকার্স। গত জুলাইতে নিউ ইয়র্কে সদবি-র নিলামে তার দর উঠেছিল চার লক্ষ ৩৭ হাজার ৫০০ ডলার। কেন? নাইকি সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল বাওয়ারম্যানের তা বানিয়েছিলেন ১৯৭২-এ। কানাডার এক উদ্যোগপতি তা কিনেছিলেন।
২০১৫-র জানুয়ারিতে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরেছিলেন তাঁর সেই বিখ্যাত স্যুটটি। পরের মাসে তা নিলাম হয় ৭ লক্ষ ডলারে। সে সময় ভারতীয় মুদ্রায় তার দাম ছিল ৪ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। সুরাতের হিরে ব্যবসায়ী লালজি পটেল তা কিনেছিলেন।
লাইকা-র জিরো সিরিজের ক্যামেরাটি তৈরি হয়েছিল ১৯২৩ সালে। সে সময় সেটিই ছিল দুনিয়ার সবচেয়ে দামি ক্যামেরা। গত বছরের মার্চে ভিয়েনার একটি নিলামে তা বিক্রি হয়েছিল ২৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ডলারে। এক এশীয় ব্যক্তি তা কিনে নেন বলে জানা গিয়েছে।
২০১৬-তে জুলিয়েনের নিলামে ওঠামাত্রই বিকিয়ে গিয়েছিল মেরিলিন মনরোর একটি পোশাক। দর উঠেছিল ৪৮ লক্ষ ডলার। হবে না-ই বা কেন? ১৯৬২-তে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির জন্মদিনে ওই পোশাকেই তো মেরিলিন গেয়েছিলেন, ‘হ্যাপি বার্থডে মিস্টার প্রেসিডেন্ট’।
ছোটবেলায় অনেকেই শখ করে ডাকটিকিট সংগ্রহ করেন। তবে একে ছেলেমানুষি ভাববেন না যেন। এ নিয়ে বিশ্ব জুড়েই জাঁকিয়ে বসেছে ব্যবসা। লাখ লাখ টাকা খরচ করেও দুষ্প্রাপ্য ডাকটিকিট সংগ্রহ করেন অনেকে। ব্রিটিশ গিনি দ্বীপের ১ সেন্ট ম্যাজেন্টা হল দুনিয়ার অন্যতম দুষ্প্রাপ্য ডাকটিকিট যা বিক্রি হয়েছিল প্রায় ৯৫ লক্ষ ডলারে।
ষোড়শ শতকে ইতালীয় শিল্পী রাফায়েলের আঁকা একটি স্কেচ বিকিয়েছিল ৩ কোটি ৮ লক্ষ ডলারে। ২০১২-তে লন্ডনে সদবি-র নিলাম থেকে কিনে নিয়েছিলেন এক অজ্ঞাতপরিচয় রাশিয়ান কালেক্টটর।
এক ঝলকে দেখলে মনে হয়, যেন একটা ফুল ফুটে রয়েছে। তবে তা আসলে একটি হাতঘড়ি। গোলাপি, সাদা, হলুদ রঙের ২০১ ক্যারাটের ৮৭৪টি হিরেখচিত এই হাতঘড়িটি নিলামে উঠেছিল ২০০০ সালে। সে সময় এটি বিকিয়েছিল আড়াই কোটি ডলার।
ওর্যাকল সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন হাওয়াইয়ে ৯০ হাজার একরের লানাই দ্বীপ কিনেছিলেন সেই ২০১২ সালে। সে সময় তাঁর খরচ হয়েছিল ৩০ কোটি টাকা। এ মুহূর্তে এর ৯৮ শতাংশ তাঁর মালিকানাধীন। বাকি ২ শতাংশ রাষ্ট্রের অধীনস্ত। সে দ্বীপে আরও ৪৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগে দু’টি পাঁচতারা হোটেল এবং একটি ছোট শহরও গড়ে তুলেছেন ল্যারি।
প্যারিসের বাইরে ১০ বেডরুমের চতুর্দশ লুই শ্যাতো দুনিয়ার সবচেয়ে দামি রেসিডেন্সিয়াল প্রপার্টি বলে চিহ্নিত। সৌদি আরবের রিয়েল এস্টেট ডেভলপার ইমাদ খাশোগি তা গড়ে তুলেছিলেন। তবে ২০১৫-তে মধ্য এশিয়ার এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে তা ৩০ কোটি ১ লক্ষ ডলারে বিক্রি করে দেন তিনি।
সতেরোশো শতকে তৈরি করা হয়েছিল এই কার্পেটটি। ২০১৩-তে সদবি-র নিলামে চড়ানোর পর তার দর উঠেছিল ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ ডলার। নিলামে বিক্রিত কাপের্টের মধ্যে এই কার্পেটটিই সবচেয়ে দামি বলে জানা গিয়েছে।