দেশের মাটি: ১০০ বিঘা মাঠের ক্যানভাসে দু’রঙের ধানের চারা পুঁতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে শেখ মুজিবের মুখের ছবি। বাংলাদেশের বগুড়ার শেরপুরে। নিজস্ব চিত্র
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তরণকেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের উন্নয়নের সেরা অর্জন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিনে এই অর্জনকে তাঁর প্রতি ‘সব চেয়ে সেরা শ্রদ্ধার্ঘ্য’ বলেও মনে করেন তিনি। সন্ধ্যায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠান থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে মুজিব-কন্যা বলেন, “এখন আমাদের শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। পিছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। সকল বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে এ দেশকে আমরা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের দেশ, শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, ক্ষুধা-দারিদ্র-নিরক্ষরতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করব। এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা।”
বুধবার মহা সমারোহে শেখ মুজিবের ১০১তম জন্মদিন পালিত হল বাংলাদেশে। আজ থেকে ১০ দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘মুজিব বর্ষ’ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে বাংলাদেশ সরকার। প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে ঢাকায়। এই অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবেই ২৬ ও ২৭ মার্চ ঢাকা যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূচনা অনুষ্ঠানে এ দিন উপস্থিত ছিলেন মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মহম্মদ সলি। বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবের মাজারে ফুল দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আব্দুল হামিদের পক্ষে। শেখ মুজিবের জন্মদিনটি প্রতি বছর বাংলাদেশে পালিত হয় শিশুদিবস হিসেবে। এ দিন শিশুদের উদ্দেশে হাসিনা বলেন, “শেখ মুজিব হলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংগ্রামের প্রতীক। তাঁকে স্মরণ করে বাংলাদেশের শিশুরা যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারে।”
কেরানিগঞ্জের কারাগারের বিশাল মাঠে বন্দিরা মঙ্গলবার রাত থেকে দলে দলে ভাগ হয়ে ৭১৪টি কম্বল বিছিয়ে ফুটিয়ে তোলেন শেখ মুজিবের তর্জনী তোলা সেই বিখ্যাত ছবিটিকে। বগুড়ার শেরপুরে ১০০ বিঘা জমিতে দু’রঙের ধানের চারা লাগিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মুজিবের মুখচ্ছবি। বিশ্বে এ ধরনের বৃহত্তম শস্যচিত্রের মর্যাদা পেয়েছে এই শিল্পকর্মটি। সন্ধ্যার মূল অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে রাজনীতির গুণগত মানের অবনমন পীড়া দেয়। সব রাজনীতিকের উচিত শেখ মুজিবের আদর্শে বলীয়ান হয়ে আপন এবং দলের স্বার্থের চেয়েও দেশকে এগিয়ে রাখা।