ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।
কানাডায় খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর খুনের ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের ‘হাত রয়েছে’ বলে আবার দাবি করলেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শুক্রবার কানাডার রাজধানী অটোয়ায় সাংবাদিক বৈঠকে ট্রুডো বলেন, ‘‘ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে খলিস্তানি জঙ্গির হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত। এ কথা কয়েক সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লিকে জানিয়েছে কানাডা।’’ এর আগেও এই একই দাবি করেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে ভারত-কানাডা সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। তার মধ্যে ট্রুডোর আবার এই দাবি দু’দেশের সম্পর্কে নতুন করে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত জুনে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে খুন হন খলিস্তানপন্থী নেতা নিজ্জর। হরদীপের খুনের নেপথ্যে ভারত সরকারের হাত থাকতে পারে বলে সম্প্রতি সে দেশের পার্লামেন্টে মন্তব্য করেছিলেন ট্রুডো। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সরাসরি খারিজ করে দেয় নয়াদিল্লি। আর এই ঘটনা নিয়েই দু’দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক চাপানউতর। ভারতে বসবাসকারী বা ঘুরতে যাওয়া কানাডার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে সে দেশের সরকার। তার পাল্টা কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় পড়ুয়া এবং নাগরিকদের চূড়ান্ত সতর্ক ভাবে থাকতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন টালমাটাল, তখন আবার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের দিকেই আঙুল তুললেন ট্রুডো।
শুক্রবার ট্রুডো বলেছেন, ‘‘সোমবার আমি যা বলেছিলাম, তা নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য কয়েক সপ্তাহ আগেই ভারতকে জানিয়েছে কানাডা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গঠনমূলক ভাবে কাজ করার জন্য ভারতের সঙ্গে সর্বদা রয়েছি। আশা করব, তারাও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে এবং এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’’ তবে কী তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে কানাডার গুপ্তচর সংস্থা, সে ব্যাপারে খোলসা করেননি ট্রুডো। এর আগে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘কানাডার মাটিতে কানাডার এক নাগরিকের মৃত্যুতে ভারতীয় এজেন্টদের হাত রয়েছে। এ দেশে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও বিষয়টি স্পষ্ট বুঝিয়ে বলেছি।’’
ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েন নিয়ে মুখ খুলেছে আমেরিকা। এই ঘটনার তদন্তে তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে জো বাইডেনের সরকার। আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ করেছেন, তা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’’