ঋষি সুনক।
প্রথম বার বাজেট পেশ করে যথেষ্ট নজর কেড়েছেন দেশের অর্থমন্ত্রী এবং ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তির জামাই ঋষি সুনক। তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মন্ত্রী লম্বা সময়ের জন্য দেওয়া ব্রিটিশ ভিসাকে আরও দুর্মূল্য করার কথা গত কাল ঘোষণা করেছেন। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের ভিসায় বাধ্যতামূলক যে ‘হেল্থ ফি’ দিতে হয়, তা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন ঋষি। যা দেখে ভাঁজ পড়েছে ভারতীয় শিল্পকর্তাদের কপালে।
ঋষি জানিয়েছেন, ‘ইমিগ্রেশন হেল্থ সারচার্জ’ (আইএইচএস) বছরে ৪০০ পাউন্ড থেকে ৬২৪ পাউন্ড করা হয়েছে। ৩৯ বছর বয়সি মন্ত্রীর কথায়, ‘‘অভিবাসীরা আইএইচএস থেকে উপকৃত হন। অবশ্যই চাই, তাঁরা সেটা পান। কিন্তু কিছু পেতে গেলে কিছু দিতেও হয়। সারচার্জ আগেও ছিল। কিন্তু মানুষ যতটা উপকৃত হন, সেই অনুপাতে মূল্য দিতে হত না। তাই ইস্তাহারে যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেইমতো আইএইচএস বাড়িয়ে ৬২৪ পাউন্ড করেছি। শিশুদের ক্ষেত্রে ছাড় থাকবে।’’
গত বছরের ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও ইঙ্গিত দেন এই সারচার্জ বাড়বে। শিশুদের ছাড় দিয়ে সারচার্জ এখন দাঁড়াচ্ছে ৪৭০ পাউন্ড। ১৮-র নীচে সকলেই এই ছাড় পাবে। তবে আন্তর্জাতিক পড়ুয়ারা আইএইচএস-এ যে ছাড় পেতেন, তা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৪৭০ পাউন্ড করা হয়েছে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে আইএইচএস শুরু হয়। ২০১৮-র ডিসেম্বরে ফি বাড়িয়ে দু’শো পাউন্ডের জায়গায় চারশো পাউন্ড করা হয়। ব্রিটেনে কাউকে যদি কাজ বা পড়াশোনার জন্য ছ’মাসের বেশি সময় থাকতে হয় অথবা পারিবারিক ভিসা জোগাড় করতে হয়, সে ক্ষেত্রে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে (ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস) মজবুত করতে তাঁদের উপরে এই সারচার্জ চাপানো হয়।
সুনক সারচার্জ বাড়িয়ে প্রশংসাই কুড়িয়েছেন। তাঁর বাজেট নিয়ে আজ প্রথম পাতা ছেয়ে গিয়েছে ব্রিটেনের সব দৈনিকের। এক মাস দায়িত্বে থেকে তিনি যে দক্ষতা দেখিয়েছেন, তা নিয়ে খুশি সংবাদমাধ্যম। প্রেস গ্যালারি থেকে গত কাল ঋষির স্ত্রী অক্ষতার নজর ছিল স্বামীর উপরেই। প্রথম বার স্বামী কতটা সফল হবেন, চিন্তায় ছিলেন অক্ষতা। হতাশ করেননি ঋষি। কনজ়ারভেটিভদের বেঞ্চ থেকে তুমুল হাততালি আর প্রশংসা বুঝিয়ে দিয়েছে ঋষি সফল। বাজেট পেশ করতে করতে সুনক বারবার বললেন, ‘‘আমরা এটা করে ফেলব।’’ ঠিক প্রধানমন্ত্রী জনসনের ঢংয়ে, ব্রেক্সিটের সময়ে যেমন তিনি বলতেন। কনজ়ারভেটিভদের অনেকেই যে ঋষির মধ্যে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর আভাস দেখছেন, তাতে আর আশ্চর্য কী!