ছবি রয়টার্স।
নিজের দায়িত্ব নিজের। মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তাও এ বার নিজেকেই বুঝতে হবে। —এমনই বক্তব্য ব্রিটিশ সরকারের। গত মাসে লকডাউন সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডেল্টা স্ট্রেনের প্রকোপে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। এ বারে শোনা যাচ্ছে, আগামী ১৯ জুলাই লকডাউন তুলে দেওয়া হবে। করোনা-বিধিও আর সে ভাবে রাখা হবে না। মাস্ক পরাও আর বাধ্যতামূলক থাকবে না। ‘ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ’ হিসেবে দেখা হবে বিষয়টিকে।
আবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক জানিয়েছেন, ১৯ জুলাই সম্পূর্ণ ভাবে লকডাউন তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এ বারে সাধারণ মানুষের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয়তা বুঝে মাস্ক পরার দায়িত্ব মানুষকেই নিতে হবে।
ব্রিটিশ দৈনিকগুলোতে আগেই এই ইঙ্গিত মিলেছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার বিধি ও অন্যান্য করোনা-বিধি তুলে নেওয়ার কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। জেনরিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ব্যাপারটা এ রকম— টিকাকরণের সাফল্যে বিধিনিষেধ লঘু করা হচ্ছে। আমরা পুরনো জীবনে ফিরতে পারছি। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে— আমরা একটা নতুন যুগে প্রবেশ করছি। ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস করা আমাদের শিখতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রত্যেককে নিজের দায়িত্ব নিতে হবে।’’
জেনরিক আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন খুব শীঘ্রই সবটা জানাবেন। তবে সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে সরকারের হাতে আসা কোভিড-তথ্যের উপরে। প্রয়োজনের বেশি কিছু করতে হবে না কাউকে। সরকার কিছু বলে দেবে না, কী করতে হবে, না হবে। নিজেকেই বিচার করতে হবে। নিজের দায়িত্ব নিতে হবে।’’
জার্মানি, ইটালি-সহ ইউরোপের একাধিক দেশ আগেই মাস্ক পরার বিধি তুলে দিয়েছে। এর মধ্যে ইউরো চলছে। গত মাসে ফরাসি ওপেন হয়েছে। এখন উইম্বল্ডন শুরু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বারবারই সতর্ক করছে, নতুন ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে যে কোনও মুহূর্তে। এমনিতেই সংক্রমণ বৃদ্ধির লক্ষণ স্পষ্ট। স্পেনে ৮০% সংক্রমণ বেড়েছে। ৭১% সংক্রমণ বেড়েছে ব্রিটেনে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিধিনিষেধ লঘু করতে চাইছে একাধিক দেশ। টিকাকরণের জোরেই তাদের এই ‘স্বাধীনতা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে ব্রিটেন।
কিছু দিন আগেই আমেরিকা সরকারের মুখে এই কথা শোনা গিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ‘‘কোভিড টিকার দু’টো ডোজ় নেওয়া থাকলে ভয় নেই।’’ সেই যুক্তিতে আজ তারা স্বাধীনতা দিবসে ‘করোনা-মুক্তি’ উদ্যাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হোয়াইট হাউসে বিশেষ পার্টি হবে। ন্যাশনাল মলে বাজির উৎসব। হাজারখানেক মানুষের জমায়েত হওয়ার কথা।
ও দিকে, রাশিয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে ফের। এই নিয়ে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুতে রেকর্ড গড়ল রাশিয়া। ডেল্টা স্ট্রেনের জেরেই এত মৃত্যু বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল হয়েছে। স্পেন বনাম সুইৎজ়ারল্যান্ড। তার পরেই কয়েকশো সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়া শনিবার রেকর্ড গড়েছে। এক দিনে ২৭,৯১৩ জন সংক্রমিত। ইরানের পরিস্থিতি বেশ খারাপ। প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি জানান, দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়েছে। আশঙ্কা, শীঘ্রই পঞ্চম ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে ইরানে।