ফাইল চিত্র
রিয়ো ডি জেনেইরো, ১ এপ্রিল: আমেরিকাকে ছাপিয়ে করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে পৌঁছল ব্রাজিল। মঙ্গলবার এক দিনে ৩৭০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রকই জানিয়েছে সে কথা। সরকারের এই ঘোষণার পরে এক ব্রাজিলীয় সংবাদিক প্যাট্রিসিয়া ক্যাম্পোস মেলো বলেন, ‘‘অক্সিজেনের অভাবে লোকজন মারা যাচ্ছেন। দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।’’ প্যাট্রিসিয়ার মন্তব্যে সাংবাদিকদের কথা কতটা ভরসাযোগ্য, তা নিয়ে স্বভাবচিত ভাবেই প্রশ্ন তোলেন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। পাল্টা জবাব হিসেবে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন সাংবাদিক।
পরিসংখ্যান বলছে, মার্চ মাসে রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে ব্রাজিলে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। মার্চে তার দ্বিগুণেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৬৬,৫৭৩ জন।
এখনও পর্যন্ত করোনা-সংক্রমণে ২৮ লক্ষের বেশি মৃত্যু হয়েছে গোটা বিশ্বে। সর্বোচ্চ মৃত্যু আমেরিকায়, ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার। ব্রাজিল দ্বিতীয় স্থানে, ৩ লক্ষ ২১ হাজার। বহু দেশেই টিকাকরণ বন্ধ, নয়তো গতি একেবারেই ধীর। সেই সঙ্গে নতুন স্ট্রেনের দাপট তো রয়েইছে।
ইউরোপেও সংক্রমণ বেড়েছে নতুন স্ট্রেনের ধাক্কায়। ফ্রান্সে নতুন করে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ গত কাল সাময়িক ভাবে স্কুল বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছেন। দেশের কিছু কিছু অংশে লকডাউন করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মাকরঁ বলেন, ‘‘দেশ সম্পূর্ণ শাটডাউন না-করে কী ভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছি আমরা।’’
ফরাসি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে যে সংক্রমণ ঢেউ আছড়ে পড়েছে ফ্রান্সে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে শীর্ষ ছুঁতে পারে তা। ইটালি, অস্ট্রিয়া, জার্মানি-সহ ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই সংক্রমণ বাড়ছে। জার্মানিতে নতুন সংক্রমিতদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই ব্রিটেন-স্ট্রেনে আক্রান্ত। অস্ট্রিয়ায় নতুন করে লকডাউন শুরু হল বৃহস্পতিবার।
ইতিমধ্যে ফাইজ়ার-বায়োএনটেক জানিয়েছে, তাদের কোভিড-ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে অন্তত ছ’মাস বহাল থাকবে। তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই দাবি জানিয়েছে তারা।
এ দিকে, এক ডোজ়ের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’ আজ খারাপ খবর শুনিয়েছে। ব্লাটিমোরে তাদের কারখানায় কর্মীদের ভুলে নষ্ট হতে বসেছে টিকার অন্তত দেড় কোটি ডোজ়। সংস্থার পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাবশত ভুল উপাদান মিশিয়ে ফেলেছিলেন কর্মীরা। তাতেই এই
বিপর্যয়।