ধৃতের নাম সুশান্ত সাহা ওরফে হাবু। —প্রতীকী চিত্র।
ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে মারধর এবং কয়েক লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সুশান্ত সাহা ওরফে হাবু। তিনি বেলেঘাটার একটি পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তিনি এলাকায় রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুশান্ত পাল্টা দাবি করেছেন, তিনিই ওই ব্যবসায়ীর থেকে টাকা পান।
জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর নাম কাজল মণ্ডল। তিনি মধ্যমগ্রামের দোলতলার বাসিন্দা। শহরে একাধিক ব্যবসা রয়েছে তাঁর। কাজলের অভিযোগ, ৬ জানুয়ারি সুশান্ত এবং তাঁর দলবল বেলেঘাটায় একটি অফিসে ডেকে নিয়ে যায় তাঁকে। তার পরে সেখানেই একটি ঘরে তাঁকে আটকে রেখে কয়েক লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। কাজল তা দিতে রাজি না হওয়ায় টানা ছ’ঘণ্টা তাঁকে ওই ঘরেই আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, লাঠি, রড দিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে ব্যবসায়ীর দাবি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তিনি আরও জানিয়েছেন, নগদে তাঁর কাছে কয়েক লক্ষ টাকা দাবি
করা হয়েছিল। কিন্তু তা দিতে না পারায় কয়েকটি ফাঁকা চেকে তাঁকে দিয়ে জোর করে সই করিয়ে নেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা ২৫ লক্ষ টাকার একটি গাড়ি এবং সেটির চাবিও কেড়ে নেয় অভিযুক্তেরা।
ঘটনার পরের দিন বেলেঘাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। তদন্তে নেমে বুধবার অভিযুক্ত সুশান্তকে গ্রেফতার করে বেলেঘাটা থানার পুলিশ। তবে এখনও ব্যবসায়ীর গাড়িটি উদ্ধার হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। অভিযুক্ত বেলেঘাটা এলাকার একটি পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা বলে জানা গিয়েছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘কী কারণে এই বিবাদ, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মারধরের ঘটনায় এক জন ছিলেন, না কি আরও কেউ জড়িত, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত দাবি করেছেন, ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে দমদম বিমানবন্দরের কাছে একটি জমি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অভিযোগকারী ব্যবসায়ী সুশান্ত-সহ আরও তিন জনের থেকে মোট এক কোটি ছ’লক্ষ টাকা নেন। জমিটি না পাওয়া গেলে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। জমিটি পাওয়া যায়নি বলে তাঁর কাছে টাকা ফেরত চান সুশান্তেরা। পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, ওই ব্যবসায়ী টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করছিলেন। সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টাতেই তাঁকে ডাকা হয়েছিল বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ধৃত। পাল্টা এই অভিযোগ নিয়ে অভিযোগকারী ব্যবসায়ী কোনও কথা বলতে চাননি।
সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি, তৃণমূল কংগ্রেসের সমরেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এক প্রোমোটারকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় কিশোর হালদার নামে বাগুইআটির ওই বাসিন্দাকে। তিনি নিজের জমিতে বৈধ নকশা নিয়ে নির্মাণের কাজ করতে চাইলেও সমরেশ ৫০ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পরে তিন সপ্তাহের বেশি কেটে গেলেও এখনও অধরা অভিযুক্ত। তাঁর খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। তার মধ্য়েই ফের রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী আর এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে টাকা চেয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল।