সন্ত্রাস বা এনএসজি, মোদী-মের্কেল একসুর

শুধু সন্ত্রাস নয়, উষ্ণায়ন-সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গেই দু’দেশের ঐকমত্যের কথা তুলে ধরেছেন দুই নেতা। উল্লেখ করেছেন পরস্পরের সরকারের ভাল দিকগুলির। মের্কেল যেমন প্রশংসা করছেন ভারতে জিএসটি চালুর উদ্যোগকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বার্লিন শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০২:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

সন্ত্রাসই হোক বা সাইবার সন্ত্রাস। বিপদটা কারও কম নয়। তাই এর মোকাবিলাও যে হাতে হাত রেখেই করতে হবে— সেই বার্তাই আজ উঠে এল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের আলোচনা ও তার পরের যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে, যৌথ বিবৃতিতে। মোদী বললেন, ‘‘আগামী প্রজন্মের সামনে সন্ত্রাস এক গভীর সঙ্কট। এর মোকাবিলায় একজোট হতেই হবে মানবতাবাদী শক্তিগুলিকে।’’ মের্কেলের সংযোজন, ‘‘ভারত খুবই নির্ভরযোগ্য সহযোগী। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতাকে আরও গভীর করে তুলতে পেরেছি আমরা। ভারত ও ইউরোপ, উভয়েই সন্ত্রাসের সমস্যায় ভুগছে। আসন্ন জি-২০ বৈঠকে এটা নিয়ে আলোচনা হবে।’’

Advertisement

শুধু সন্ত্রাস নয়, উষ্ণায়ন-সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গেই দু’দেশের ঐকমত্যের কথা তুলে ধরেছেন দুই নেতা। উল্লেখ করেছেন পরস্পরের সরকারের ভাল দিকগুলির। মের্কেল যেমন প্রশংসা করছেন ভারতে জিএসটি চালুর উদ্যোগকে। নিজেদের উদ্বেগের দিকগুলিও উঠে এসেছে আলোচনায়। জার্মানি চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবর) প্রকল্পের পাশে থাকলেও ভারত কোন উদ্বেগ থেকে এর বিরোধিতা করছে প্রধানমন্ত্রী মোদী তা ব্যাখ্যা করেন মের্কেলের কাছে।

আরও পড়ুন:বিলেতে এগোচ্ছে লেবার পার্টি, চাপের মুখে টেরেসা

Advertisement

আকস্মিক: ছবির প্রচারে বার্লিনে এসেছেন বলিউড তারকা প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। মঙ্গলবার হঠাৎ দেখা দু’জনের। পরে প্রিয়ঙ্কা টুইট করেন, ‘আমাকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ স্যর (নরেন্দ্র মোদী)। ঘটনাচক্রে দু’জনেই আজ বার্লিনে।’ পিটিআই

শুরুটা চমক দিয়ে করলেও তিন বছর পেরিয়ে এসে এখন অনেক প্রশ্ন মোদীর বিদেশনীতি নিয়ে। কার্যত চাপ কাটাতেই চার দেশ সফরে বেরিয়েছেন তিনি। আপাত লক্ষ্য বাণিজ্যলাভ। সেই লক্ষ্যে বার্লিনে আজ বেশ ক’টি চুক্তিও হয়েছে। তবে অন্যান্য প্রসঙ্গেও ভারতের পাশে থাকার যে বার্তা আজ জার্মানির তরফে মিলল, মোদীকে তা চাপ কাটাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। সেপ্টেম্বরে ভোট এ দেশে। তার আগে যেন বন্ধু পেলেন মের্কেলও। প্রচুর সংখ্যায় সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ঘরে-বাইরে সমালোচনা সইতে হয় তাঁকে। কার্যত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেত্রীর ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ব্রেক্সিটের ব্রিটেন বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার উপরে ভরসা না রেখে ইউরোপ নিজেই তার পথ খুঁজে নেবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চটেছেন এতে। উষ্ণায়ন প্রশ্নেও তিনি মের্কেলের উল্টো মেরুতে। আজ ট্রাম্প টুইট করেছেন, ‘‘জার্মানির সঙ্গে আমাদের বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি। ন্যাটো ও সামরিক খাতে যা দেওয়ার কথা, তার চেয়ে ঢের কম দেয় ওরা।’’ ঠিক এ সময়েই মোদী পাশে দাঁড়িয়েছেন মের্কেলের। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে মের্কেলের শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন খোলাখুলি।

মোদীর এই সফরে ভারত-জার্মানি সহযোগিতা বাড়াতে দুই সরকারের চতুর্থ বৈঠকটি (আইজিসি) হল এ দিন। দেখা হল সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলি। কথা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের অবাধ বাণিজ্য নিয়ে থমকে থাকা আলোচনা নিয়েও। মের্কেলের সঙ্গে ভারতের স্বার্থের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করেন মোদী। এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি ও রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়ার প্রসঙ্গ সেগুলির অন্যতম। দু’টি ক্ষেত্রেই ভারতের দাবিকে সমর্থন জানানোর জন্য মোদী আজ ধন্যবাদ জানান মের্কেলকে। ভারত-জার্মানি উভয়েই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে চায়। পরস্পরের দাবিকে সমর্থন করার পাশাপাশি এক সুরে নিরাপত্তা পরিষদে সংস্কারের দাবিও জানিয়েছেন মোদী ও মের্কেল।

মোদীর পরের নিশানা স্পেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement