ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। -ফাইল ছবি।
বিজ্ঞানী, চিকিৎসকরা নিষেধ করছেন। মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনেকেই কিন্তু কিন্তু করছেন। বুঝেশুনে চলতে বলছেন। তবু বড়দিনের উৎসবের সময় অতিমারিতে চালু হওয়া সব রকমের কড়াকড়ি ব্রিটেনে তুলে দেবেন বলে ঠিক করেই ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ‘এই অসম্ভব কঠিন একটা বছরে’ বড়দিনের সময়ে অন্তত দেশের সব পরিবারকে উৎসবে মেতে থাকার সুযোগ দিতে চান প্রধানমন্ত্রী। অথচ গত কাল রাতেই এক সরকারি উপদেষ্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘অগ্নিতে ঘৃতাহুতি দেবেন না’। মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও অনেকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা বুঝেশুনে চলারই পক্ষে।
প্রধানমন্ত্রী জনসন গোঁ ধরে বসে থাকলে ব্রিটেনের মানুষকে আর রক্ষা করা যাবে না, বলছেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, বড়দিনের উৎসবের সময় সব কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হলে মানুষের ঢল নামবে পথেঘাটে। তাতে নতুন বছরে পা দেওয়ার পরপরই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে পড়তে হবে গোটা ব্রিটেনকে। মৃত্যু হবে বহু মানুষের। সংক্রমণকে আর ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।
দৈনিক ‘দ্য টাইমস’ জানাচ্ছে, ব্রিটেনের সবক’টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই চাইছেন, সংক্রমণ যাতে ফের ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে না যায় সে জন্য ‘টায়ার-৩’ পর্যায়ের কড়াকড়ি চালু থাকুক, ব্রিটেনের সর্বত্র, আরও দু’-এক মাস অন্তত। অতিমারি পরিস্থিতিতে এটাই ব্রিটেনে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ের কড়াকড়ি।
আরও পড়ুন: বিবেকের নাম ঘিরেও চর্চা আমেরিকায়
আরও পড়ুন: আমেরিকা-ভারত প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন করতে উদ্যত চিন, দাবি নথিতে
দেশের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস প্রোভাইডারের চিফ এগজিকিউটিভ ক্রিস হপসন বলেছেন, ‘‘টায়ার-১ এবং টায়ার-২ পর্যায়ের কড়াকড়ি মোটেই কার্যকরী হবে না এখনকার পরিস্থিতিতে। বাধ্যতামূলক ভাবে দেশের সর্বত্র জারি থাকতে হবে টায়ার-৩ পর্যায়ের কড়াকড়ি।’’
হপসনের হুঁশিয়ারি, এই সর্বোচ্চ কড়াকড়ি শিথিল করা হলে ‘সংক্রমণ ও মৃত্যুর বন্যা বয়ে যাবে, যা চলে যাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে’।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ এও বলছেন, টায়ার-৩ ব্যবস্থাও কার্যকরী হবে না বেশি দিন। প্রয়োজন হবে আরও বেশি কড়াকড়ি, টায়ার-৪ পর্যায়ের।
রয়্যাল কলেজ অব এমার্জেন্সি মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট ক্যাথরিন হেন্ডারসন বলেছেন, ‘‘বড়দিনটিই না মাসের সেই দিনটি হয়ে দাঁড়ায়! যে দিনটিকে আমাদের সারা জীবন মনে রাখতে হবে আর সেই দিনটির জন্য আমাদের দুঃখ করে যেতে হবে আজীবন।’’