পার্লামেন্টে বরিসের শব্দপ্রয়োগে আপত্তি

পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত বেআইনি— সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেওয়ার পরে কাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বরিস প্রথম পা রাখেন হাউস অব কমন্সে। বিরোধীরা দাবি তোলেন, হয় ক্ষমা চান, নয়তো ইস্তফা দিন বরিস। স্লোগান ওঠে, বরিস ‘মিথ্যেবাদী’, ‘প্রতারক’, জেলে যাওয়া উচিত ওঁর।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৮
Share:

বরিসের মন্তব্যে উত্তাল পার্লামেন্ট। ফাইল চিত্র

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিউ ইয়র্ক থেকে ফিরে এসে কাল সন্ধ্যায় পার্লামেন্টে যোগ দেন। তার পর থেকে যা যা হল, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। কান্নাকাটি, হইহল্লা তো ছিলই, সঙ্গে আপত্তি ওঠে বরিসের শব্দপ্রয়োগ নিয়েও। সব দেখেশুনে উইনস্টন চার্চিলের নাতি এবং প্রবীণ কনজ়ারভেটিভ এমপি (যাঁকে বরিস দল থেকে বহিষ্কার করেছেন) স্যার নিকোলাস সোমস বলেছেন, গত কাল রাতে তিনি পার্লামেন্টে যে অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন, তা অতীতে দেখেননি।

Advertisement

একটি ব্রিটিশ রেডিয়োয় সোমস বলেছেন, ‘‘গত রাতে হাউস অব কমন্সে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে এবং যে ভাবে তা প্রয়োগ করা হয়েছে, দেখে আমি অসম্ভব ব্যথিত, আশাহত...। প্রধানমন্ত্রীর কাজ গোটা দেশকে একত্রিত করা। কিন্তু উনি গত কাল আরও বিভাজনের দিকে এগিয়ে গেলেন...। এ বার এক জন প্রধানমন্ত্রীর মতো আচরণ করা উচিত জনসনের।’’

পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত বেআইনি— সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেওয়ার পরে কাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বরিস প্রথম পা রাখেন হাউস অব কমন্সে। বিরোধীরা দাবি তোলেন, হয় ক্ষমা চান, নয়তো ইস্তফা দিন বরিস। স্লোগান ওঠে, বরিস ‘মিথ্যেবাদী’, ‘প্রতারক’, জেলে যাওয়া উচিত ওঁর। প্রধানমন্ত্রী তাতে পাত্তা না দিয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। ক্ষমা-ইস্তফার প্রশ্ন উড়িয়ে তিনি বিরোধীদের বলেন, আপনারা ‘জ়োম্বি (ভুতুড়ে) পার্লামেন্ট’-এর অংশ। বরিসের এই সব মন্তব্যের পরে শোরগোল শুরু হয়ে যায় হাউসে। কেঁদে ফেলেন কয়েক জন এমপি। বরিস অবশ্য বলে যান, তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিচ্ছেন ঠিকই, তবে তার সঙ্গে সহমত নন। পূর্ব-পরিকল্পনা মতোই ৩১ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া এগোতে চান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

ব্রেক্সিটের জন্য ইইউয়ের কাছে বাড়তি সময় চাইতে এমপি-রা যে আইন পাশ করেছেন, তা বরিসের মতে ‘আত্মসমর্পণকারী আইন’ ছাড়া কিছু নয়। বিরোধী লেবার পার্টির এমপি পলা শেরিফ বরিসকে বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী আইন’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘বিশ্বাসঘাতক’— এমন শব্দ ব্যবহার করবেন না। লেবার নেতা করবিনকে বিঁধে বরিস আবার বলেন, ‘‘নিজের দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। জানেন না, ইইউয়ে থাকবেন, না বেরিয়ে যাবেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে আটকে রেখেছেন। ‘জ়োম্বি পার্লামেন্টে জ়োম্বি বিরোধীদের’ মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা বন্দি হয়ে পড়েছে।’’ ‘জ়োম্বি পার্লামেন্ট’ দ্বিতীয় বারের জন্য সাসপেন্ড করতে চান তিনি, জানিয়েছেন বরিস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement