Boat Capsized

জাহাজডুবি, তলিয়ে গেলেন ৬১ শরণার্থী

আফ্রিকা থেকে ইওরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এই সমুদ্রপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। লিবিয়া এবং টিউনিশিয়া তাঁদের যাত্রা শুরুর অন্যতম কেন্দ্র।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কায়রো ও ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১৬
Share:

রয়টার্সের প্রতীকী ছবি।

লিবিয়া থেকে রওনা হওয়া একটি জাহাজ ডুবে সমুদ্রে তলিয়ে গেলেন ৬১ জন শরণার্থী। ‘ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজ়েশন ফর মাইগ্রেশন’ (আইওএম) সমাজমাধ্যমে এই খবর জানিয়েছে।

Advertisement

আফ্রিকার মিশর, লিবিয়া, টিউনিশিয়া এবং আলজেরিয়া থেকে ইওরোপের মাল্টা ও ইটালিতে অনুপ্রবেশের পথ বিশ্বের সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। আইওএম-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ বছর ইতিমধ্যেই ২২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আফ্রিকা থেকে ইওরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এই সমুদ্রপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন। লিবিয়া এবং টিউনিশিয়া তাঁদের যাত্রা শুরুর অন্যতম কেন্দ্র। আমেরিকার একটি শরণার্থী সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ওই দু’টি জায়গা থেকে দেড় লক্ষেরও বেশি শরণার্থী ভিন্‌ দেশে পাড়ি দিয়েছেন।

তলিয়ে যাওয়া জাহাজটির বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানান, জাহাজে ৮৬ জন সওয়ারি ছিলেন। তাঁদের নিয়ে লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলের জুয়ারা শহর থেকে ১৩ এবং ১৪ ডিসেম্বরের মাঝের রাতে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। যাত্রীদের মধ্যে শিশু ও মহিলারাও ছিলেন। তাঁরা মূলত নাইজেরিয়া, গাম্বিয়া ও আফ্রিকার অন্য দেশগুলির বাসিন্দা। ২৫ জনকে উদ্ধার করে লিবিয়ায় প্রশাসনিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইওএম জানিয়েছে, তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হয়েছে। সবাই সুস্থই। সন্দেহ করা হচ্ছে, বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় জাহাজটি ডুবে যায়।

Advertisement

পশ্চিমি সামরিক জোট নেটোর সমর্থনপ্রাপ্ত একটি অভ্যুত্থানে ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন লিবিয়ার টানা চার দশকের একনায়ক মুয়াম্মর গদ্দাফি। পরে হত্যাও করা হয় তাঁকে। সেই থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষে জর্জরিত হয়ে রয়েছে দেশটি। আফ্রিকার অনেক দেশই গোষ্ঠী-সংঘর্ষ কিংবা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত। এর পাশাপাশি এই মহাদেশে ক্রমশ বেড়ে চলেছে মানবপাচার চক্রের সক্রিয়তা। এ দিকে, বছরখানেক হল ইটালিতে ক্ষমতায় এসেছে জর্জিয়া মেলোনির দক্ষিণপন্থী সরকার। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মেলোনির অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল বেআইনি অনুপ্রবেশ আটকানো। উত্তর আফ্রিকা থেকে সমুদ্রপথে বিপজ্জনক ভাবে ইউরোপে আসার সময়ে বিপদে পড়া মানুষজনকে বাঁচাতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বেশ কিছু জাহাজ নিযুক্ত থাকে। মেলোনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে এদের গতিবিধির উপরে কড়াকড়ি শুরু করেছেন। শনিবারই রোমে এসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক বেআইনি অনুপ্রবেশ আটকানোয় মেলোনির কাজের প্রশংসা করেছেন।

এ সবের মধ্যে আবার আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, নথিপত্র ছাড়া যে সমস্ত অভিবাসী এ দেশে রয়েছেন, ‘দেশের রক্ত দূষিত করে দিচ্ছেন’ তাঁরা। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে একটি দক্ষিণপন্থী ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। নাৎসিদের করা গণহত্যার ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে সেই সময়ে বিস্তর সমালোচনাও হয়েছিল। তার পরেও নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রচার অনুষ্ঠানে গিয়ে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় অনুপ্রবেশ নিয়ে ফের একই মন্তব্য করলেন তিনি। ফের ক্ষমতায় এলে এ ধরনের অনুপ্রবেশ বন্ধ করবেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, এশিয়া, আফ্রিকা আর দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বেআইনি ভাবে আমেরিকায় চলে আসছেন প্রচুর মানুষ। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘গোটা পৃথিবী থেকে ওঁরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে চলে আসছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement