বিল গেটস। ছবি রয়টার্স।
পাখির চোখ ছিল নোবেল শান্তি পুরস্কার। তাই ‘বন্ধু’র দোষ-ত্রুটিগুলোর দিকে ফিরেও তাকাননি তিনি। মাইক্রোসফ্ট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও ধনকুবের তথা নাবালিকা যৌনহেনস্থাকারী জেফ্রি এপস্টাইনের ‘বন্ধুত্ব’ প্রসঙ্গে নতুন এই দাবি করেছে আমেরিকার এক সংবাদপত্র। এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন গেটসের মুখপাত্র।
এপস্টাইনের সঙ্গে গেটসের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয় দিন কয়েক আগে, মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে বিলের বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পরে। মেলিন্ডার আইনজীবী জানান, এপস্টাইনের মতো দাগি অপরাধীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন বিল-পত্নী। কিন্তু এপস্টাইন জেলে যাওয়ার (যেখানে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেন তিনি) আগে পর্যন্ত কয়েক বার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিল। এপস্টাইনের ম্যানহাটনের পেন্টহাউসে কিছু ‘বিশেষ বন্ধুর’ সঙ্গে কাটিয়েছিলেন কয়েকটি সন্ধেও। তত দিনে কিন্তু এপস্টাইনের বিরুদ্ধে একাধিক যৌন হেনস্থার মামলা রুজু হয়ে গিয়েছে।
আমেরিকান সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে, বিল গেটসের বহু দিনের ইচ্ছে, তাঁর নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হোক। এপস্টাইনের সঙ্গে নরওয়ের নোবেল কমিটির একাধিক সদস্যের ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাই এপস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেছিলেন গেটস।
তাদের এই দাবির সপক্ষে সংবাদপত্রটি উল্লেখ করেছে ২০১৩ সালের একটি বৈঠকের কথা। সে বার স্ট্রাসবুর্গে নরওয়ের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা নরওয়েজীয় নোবেল কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান থোরবিয়র্ন ইয়াগলান্ডের বাড়িতে বিল গেটসকে নিয়ে গিয়েছিলেন এপস্টাইন। নোবেল শান্তি পুরস্কারের দায়িত্বে থাকে এই নরওয়েজীয় কমিটিই। নরওয়ের একটি সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে আমেরিকান সংবাদপত্রটি দাবি করেছে, সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একটি ইউরোপীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং একটি নামী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা, যাঁরা যৌথ ভাবে ‘তৃতীয় বিশ্বের’ দেশগুলিতে পোলিয়ো নির্মূল করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় নোবেল কমিটি। সেই বৈঠকের পরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটিকে কোটি কোটি ডলার অনুদান দেয় গেটস ফাউন্ডেশন।
এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে গেটস ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘নোবেল পুরস্কার পাওয়া এক নিশ্চয় বিশাল ব্যাপার। যে কেউ-ই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলে দারুণ সম্মানিত বোধ করবন। বিল গেটসও ব্যতিক্রম নন। কিন্তু তিনি নিজে থেকে এপস্টাইন বা কাউকে এ নিয়ে কোনও কথাই বলেননি। এপস্টাইন এ বিষয়ে পদক্ষেপ করেছিলেন কি না, সে বিষয়ে গেটস কিছু জানতেন না।