ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরোধিতায় পাকিস্তানের নেতা-মন্ত্রী ও নানা জনপ্রিয় মুখের বার্তা ভেসে আসছে সমাজমাধ্যমে।
সন্ত্রাসে আর্থিক মদত ও দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মামলায় বুধবার ইয়াসিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে এনআইএ-র দিল্লির বিশেষ আদালতে। তার পরেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি টুইট করেন, ‘‘হুরিয়ত নেতা ইয়াসিন মালিককে জাল বিচারে অন্যায্য শাস্তি দেওয়ার তীব্র নিন্দা করছি। স্বাধীনতা ও স্বায়ত্ত শাসন চাওয়া কাশ্মীরিদের কণ্ঠ ভারত স্তব্ধ করতে পারবে না। পাকিস্তান কাশ্মীরি ভাই-বোনেদের পাশে আছে, তাঁদের ন্যায্য সংগ্রামে সম্ভাব্য সব ধরনের সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’’
ক্রিকেটার শাহিদ আফ্রিদি ‘‘সমালোচনামূলক কণ্ঠ দমনের জন্য নির্লজ্জ ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের’’ অভিযোগ এনেছেন ভারতের বিরুদ্ধে। তাঁর টুইট, ‘‘ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে বানানো-অভিযোগে কাশ্মীরের স্বাধীনতা সংগ্রামকে থামিয়ে রাখা যাবে না।’’ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
বুধবার ইয়াসিনের বাড়ির এলাকা শ্রীনগরের মাইসুমায় মিছিল থেকে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাটে টিয়ার গ্যাসের শেল। দশ জন গ্রেফতার হন গভীর রাতে। তাঁদের উপত্যকার বাইরের জেলে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ধৃতদের ছবি দিয়ে পুলিশ টুইট করে যুব-প্রজন্মকে গোলমালে না জড়ানোর বার্তা দেয়।
এত দিন তিহাড়ের যে কুঠুরিতে একা থাকতেন ইয়াসিন, কঠোর নিরাপত্তা আর কড়া নজরে সেখানেই রয়েছেন। এ দিন জেল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ থাকলেও নিরাপত্তার খাতিরে এখনই কোনও কাজ না-ও দেওয়া হতে পারে।
সংবিধানে আস্থাশীল না হওয়ায় ১৯৮৭ সালে কাশ্মীরের বিধানসভা ভোটে যোগ না দিলেও প্রচারে ঝাঁপায় ইয়াসিনের ইসলামিক স্টুডেন্টস লিগ। ফল বেরোনোর পরে গ্রেফতার হন ইয়াসিন। বছরের শেষ পর্যন্ত জেলে ছিলেন। বেরিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যান। দু’বছর পরে উপত্যকায় ফেরেন জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের (জেকেএলএফ) অন্যতম সদস্য হিসাবে। ১৯৯০ সালে জখম অবস্থায় ধরা পড়েন।
১৯৯২-এর মধ্যেই জেকেএলএফ-এর একটা বড় অংশ হয় ধরা পড়ে, নয় তো নিহত হয়। ১৯৯৪ সালে জামিনে ছাড়া পান ইয়াসিন। সেই ইস্তক ‘গান্ধীর আদর্শ’ মেনে আগের লক্ষ্যেই লড়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তলে তলে হিজবুল মুজাহিদিনের মতো পাক সেনার মদতপুষ্ট বলে পরিচিত জঙ্গি সংগঠনের হয়ে জমি তৈরির সক্রিয়তা চলছিল বলে অভিযোগ।
২০১৭ সালে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার বিরুদ্ধে এনআইএ সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের মামলা করে। ২০১৯সালে চার্জশিটে ইয়াসিন এবং অন্যচার জনের নাম ছিল। সেই মামলাতেই ইয়াসিনের সাজা হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।