মালদহে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।
পদ্মার ও-পারে ভারতের মালদহ, এ-পারে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এক ফালি চর জেগেছে মাঝে, যার নাম সাদ্দামের চর। শুক্রবার ভোরে আধো আঁধারে একটি ডিঙি নৌকো মালদহের দিক থেকে এগিয়ে আসছে দেখে সতর্ক করতে গুলি ছোড়ে টহলদারি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-র সদস্যরা। তখনই নৌকোর মাঝি জলে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে ভারতের দিকে পালিয়ে যায়। খালি নৌকাটি তল্লাশি করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে বিজিবি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৫৩ সীমান্তের সীমান্তে মোতায়েন বিজিবি বাহিনীর অধিনায়ক সাজ্জাদ সারোয়ার সাংবাদিকদের এই খবর জানিয়েছেন।
ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই এলাকা চোরাচালানের পরিচিত পথ। কয়েক দশক ধরে পদ্মা পেরিয়ে অস্ত্র, সোনা, মাদক, গরু-সহ সব ধরনের চোরাচালান হয় এই পথে। ভারতের দিক থেকে চোরাই মাল এসে প্রথমে মাঝের চরে জমা করে রাখা হয়। তার পরে সুযোগ মতো তা নৌকায় বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এত দিন এই পথেই পাকিস্তানে ছাপা ভারতীয় জালনোটের বান্ডিল বাংলাদেশে হয়ে মালদহ-মুর্শিদাবাদে চক্রের পাণ্ডাদের হাতে পৌঁছে যেত। কিন্তু ভারত সরকার জালনোট পাচার মোকাবিলার বিষয়টি এনআইএ-র হাতে দেওয়ার পরে চাঁপাই সীমান্ত দিয়ে এখন এই কাজ অনেকটাই বন্ধ হয়েছে বলে এলাকাবাসীদের দাবি।
বিজিবি-র অধিনায়ক সারোয়ার জানান, শুক্রবার ভোরে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর এলাকায় পদ্মার তীরে চোরাচালান-বিরোধী অভিযান চালাচ্ছিলেন। সেই সময়েই জলসীমা পেরিয়ে ডিঙি নৌকাটিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। টহল দলের সদস্য সুবেদার লিয়াকত আলি মাঝিকে সতর্ক করতে ২ রাউন্ড গুলি ছোড়েন। মাঝি জলে লাফিয়ে পড়ে ভারতের দিকে সাঁতার দেয়। ফেলে যাওয়া নৌকা তল্লাশি করে মাছ ধরার জালের নীচে লুকিয়ে রাখা একটি ব্যাগ থেকে ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, ৩টি ওয়ান শুটার, ১০টি গুলির ম্যাগাজিন এবং ৩৬ রাউন্ড বুলেট উদ্ধার হয়।