গত ১৬ জুলাই বার্লিনের গণেশ মন্দিরে খুঁটিপুজো দিয়ে সূচনা হয়েছিল উৎসবের। ফাইল ছবি
বিদেশে বসবাসকারী বাঙালি আর কিছু করুক না করুক, দুর্গাপুজোকে মিস করবেই। মনে পড়বে প্যান্ডেলে বসে বন্ধুদের সঙ্গে অবিরল আড্ডা। সেই মেজাজ ধরে রেখেই জার্মানির বার্লিনে আমাদের দুর্গাপুজো।
ষষ্ঠী থেকে বিসর্জন, পুজোর সব আচারই হচ্ছে পঞ্জিকা মতে। প্রতিমা এসেছে কলকাতার কুমোরটুলি থেকে। শিল্পী মিন্টু পালের তৈরি প্রতিমায় এ বারও পুজো হচ্ছে বার্লিনের গণেশ মন্দিরে। ইউরোপের শুল্ক আর নানা নিয়মের গণ্ডি পেরিয়ে দশকর্মা সামগ্রীও এসেছে ভারত থেকে। পুরুতমশাই ডুসেলডর্ফের।
পুজোর বয়স দু’বছর। গত ১৬ জুলাই বার্লিনের গণেশ মন্দিরে খুঁটিপুজো দিয়ে সূচনা হয়েছিল উৎসবের। বার্লিন জুড়ে শতাধিক ভারতীয় এসেছেন আমাদের এই মিলনমেলায়। কেউ কলেজপড়ুয়া, কেউ চাকরি করেন। তার ফাঁকেই পুজো কমিটির হয়ে প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক কিংবা ভোগের দায়িত্ব সামলাতে নেমে পড়েছেন তাঁরা। চাঁদাও তুলেছেন।
অঞ্জলি দেওয়ার ধুতি-পাঞ্জাবি ও লালপেড়ে শাড়ি আনানো হয়েছে কলকাতা থেকে। পুজোর পাঁচ দিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অষ্টমীর সন্ধিপুজোর পরেই শুরু রবীন্দ্রনৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। জার্মানির গণ্যমান্যরা আছেন আমন্ত্রিতের তালিকায়। যাঁরা আসতে পারেননি, তাঁদের শুভেচ্ছাবার্তা ফুটে উঠবে মণ্ডপের স্ক্রিনে।
পুজো হবে, একসঙ্গে ভোগ খাওয়া হবে না? খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি, পায়েস— সব বন্দোবস্তই বহু আগে সারা। বার্লিনের পঞ্জাবি রেস্তরাঁর মালিকেরা হাসিমুখে সেই দায়িত্ব নিয়েছেন। রান্না হচ্ছে তাঁদের হেঁশেলেই। ঠাকুর দেখতে এসে যে কেউ পাত পেড়ে ভোগ খেয়ে যেতে পারেন আমাদের মণ্ডপে। দশমীর সিঁদুর খেলাও বাদ যাবে না।
অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি আমরা সকলেই। জার্মান সরকারের যাবতীয় নিয়ম মেনেই সব আয়োজন করা হয়েছে। ষোলো আনা বাঙালিয়ানার মেজাজ কিন্তু জমজমাট। বার্লিনের আকাশে-বাতাসেও চেনা সুর— ‘‘এ বার আমার উমা এলে আর উমায় পাঠাব না।’’