Durga Puja 2023

বুর্জ খালিফার দেশে প্রতিমা এসেছে কুমোরটুলি থেকে

দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি সকল বাঙালির জন্য একটি গর্বের বিষয়। বাংলার সেই গর্বের ঐতিহ্যকে মনে রেখেই ‘উৎসব দুবাই’ এ বার পূজার থিম হিসেবে বাংলার চিত্রকলাকে বেছে নিয়েছে।

Advertisement

ধ্রুবজ্য়োতি সেনগুপ্ত

দুবাই শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:২৭
Share:

বুদ্ধমূর্তির আদলে তৈরি এই দুর্গাপ্রতিমা এসেছে কলকাতা থেকে। ‘উৎসব দুবাই’-এর পুজোয়। —নিজস্ব চিত্র।

শরতের কাশফুলের সোনাঝরা মেঘ যখন বাংলার আকাশকে ভরিয়ে তোলে, ঠিক সেই সময়ে ‘উৎসব দুবাই’ও মেতে ওঠে দেবী বন্দনায়। ‘উৎসব দুবাই’-এ়র পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে, এ বারের দুর্গাপুজোকে আরও জাঁকজমকপূর্ণ ও প্রাণবন্ত করে তুলতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।

Advertisement

এ বছরের দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ ছিল মহালয়ার লাইভ চণ্ডীপাঠ। ভোরের আলো ফোটার আগেই, চণ্ডীপাঠের সুমধুর ধ্বনিতে আমাদের প্যান্ডেল জেগে উঠেছিল। ঠিক যে রকম ছোটবেলায় ভোরবেলায় রেডিওতে মহালয়া শুনে ঘুম ভাঙত আমাদের।

দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি সকল বাঙালির জন্য একটি গর্বের বিষয়। বাংলার সেই গর্বের ঐতিহ্যকে মনে রেখেই ‘উৎসব দুবাই’ এ বার পূজার থিম হিসেবে বাংলার চিত্রকলাকে বেছে নিয়েছে। আমাদের পরিচিত ও সদস্যরা পুরুলিয়া থেকে ছৌ-নাচের মুখোশ, শান্তিনিকেতন থেকে কাঁথা স্টিচের জিনিস এবং ডোকরার জিনিস এনেছেন। এ সব দিয়েই এ বার আমাদের পুজোর প্যান্ডেল বানানো হচ্ছে। তা ছাড়া, চন্দননগর থেকে আলো আনা হয়েছে। এই সব শিল্পসামগ্রী দিয়ে এ বার আমাদের প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে

Advertisement

সারা বাংলার শিল্পসামগ্রী, কলকাতার শৈলীর পূজামণ্ডপ এবং চন্দননগরের আলোকশিল্প, এ সব কিছু এ বার দুবাইয়ের পুজোমণ্ডপকে এক অন্য মাত্রা দেবে। দর্শকেরা সবাই এক বাক্যে মেনে নিচ্ছেন যে, দুবাইয়ের আকাশচুম্বী অট্টালিকা ও আলোকঝর্ণার মাঝে এই পুজোমণ্ডপ এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে।

দুর্গাপুজোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল দেবী দুর্গার মূর্তি। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বছরের দুর্গা মূর্তিটি ফাইবারের তৈরি, সেটি নিয়ে আসা হয়েছে খাস কুমোরটুলি থেকে। মূতির্টি ১২ ফুট উঁচু। মূর্তির বিশালতা ও জাঁকজমক পুজোমণ্ডপে ঢোকামাত্র সকলকে অভিভূত করবে বলে আশা উদ্যোক্তাদের।

ঢাকের বাদ্য উৎসবের প্রাণ এবং এ ছাড়া দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ। এ বছরের দুর্গাপুজোয় আমরা সুদূর কলকাতা থেকে দু’জন ঢাকি নিয়ে এসেছি। এই ঢাকিরা পুজোর সব ক’টা দিন ঢাকের বাদ্যে উৎসবের সদস্যদের আনন্দে মাতিয়ে তুলবেন। পুরোহিতও কলকাতার। আমাদের পুজো শুধু সপ্তাহান্তের দু’দিনে নয়। পঞ্জিকা মেনে পুজোর সমস্ত নিয়ম মেনে পুজো হবে পাঁচ দিন ধরেই।

ভোজনরসিক বাঙালির রসনার পূর্তি না হলে পুজোর স্বাদ মেটে না। এ বছর আমাদের দুর্গাপুজোয় বাঙালি খাবারের এক বিশাল আয়োজন করা হয়েছে। এই সুস্বাদু খাবারগুলো তৈরির জন্যে কলকাতা থেকে এক বিখ্যাত রন্ধনশিল্পীকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে।

প্রতিদিন সন্ধ্যারতির পরে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শরতের সন্ধ্যাগুলিকে জমিয়ে তুলতে দেশ থেকে আসছেন বেশ কয়েক জন খ্যাতনামা শিল্পী।

দুর্গাপুজোর শেষ দিনে, রঙের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাঙালিরা। সিঁদুর খেলার আনন্দময় অনুষ্ঠানে বিবাহিত মহিলারা একে অপরকে ও দেবী দুর্গাকে সিঁদুর মাখিয়ে বিদায় জানান। উৎসব দুবাইয়ের সিঁদুর-মাখা নারী সদস্যদের মনোমুগ্ধকর নৃত্য ও দেবীকে বিদায় দেওয়ার দৃশ্যটি হৃদয়স্পর্শী এক মুহূর্ত, যা উৎসবের আনন্দময় সমাপ্তি ঘোষণা করে। আগামী বছরের দিকে তাকিয়ে শেষ হয় উৎসব-উদ্‌যাপন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement