মহালয়া মানেই বাঙালির উৎসব শুরু।
দু’দিন পরেই মহালয়া। আর মহালয়া মানেই বাঙালির উৎসব শুরু। সারা বছর অধীর আগ্রহে কাটিয়ে, সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে, বাধা-বিঘ্ন দূরে সরিয়ে অবশেষে এল আমাদের প্রাণের আনন্দ— দুর্গাপুজো।
পশ্চিম আফ্রিকার একটি ফরাসিভাষী দেশ ‘কোৎদিভোয়া’, আপনারা চিনবেন ‘আইভরি কোস্ট’ নামে। এই দেশে সারা বছর আবহাওয়া থাকে প্রায় একই রকম— নাতিশীতোষ্ণ। দেশ থেকে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকি। তবুও এই সময়ের আকাশে-বাতাসে যেন ভাসে আমার দেশের পুজোর গন্ধ। যদিও আমাদের এখানে মহালয়ার ভোর হয় কলকাতা থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে, আমাদেরও ঘুম ভাঙে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠস্বরে। মহালয়ার সকালে ওই স্তোত্র পাঠ শুনলেই মনটা ভাললাগায় ভরে ওঠে।
এ দেশে আমরা হাতেগোনা কয়েকটি বাঙালি পরিবার থাকি। তাই আলাদা ভাবে দুর্গাপুজো হয় না। তবে মন্দিরে নবরাত্রী, গরবা, ডান্ডিয়া উৎসব পালন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা আর স্বাদু ভারতীয় খাবারের দোকান, এ সব নিয়েই কয়েক দিন মেতে থাকি বিভিন্ন প্রদেশের ভারতীয়েরা ।
তবু বাঙালি তো! তাই এই সব উৎসবে অংশ নিলেও ঠিক মন ভরে না। বাড়িতে তাই ঘট বসিয়ে, ছবি এঁকে, ছোট্ট করে মায়ের আরাধনা করি। অন্তরাত্মা যেন হেসে বলে ওঠে, এই তো আমার প্রাণের পুজো। না-ই বা থাকল শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসে ঝরে পড়া শিউলি ফুলের মাতাল করা গন্ধ, না-ই বা থাকল শরতের তুলোর মতো সাদা কাশফুলে ভরে ওঠা বাংলার মাঠ-ঘাট, নদী-প্রান্তর, তবুও তো আমার দুগ্গা মা আবার ঘর আলো করে এসেছেন আজ আমাদের কাছে।