বেন ওয়ালেস। ছবি: সংগৃহীত।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন বেন ওয়ালেস। ব্যক্তিগত কারণেই এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল।
গত চার বছর ধরে, সেই বরিস জনসনের আমল থেকে, ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ওয়ালেস। জনসনের পরে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন লিজ় ট্রাস এবং তার পরে ঋষি সুনক। অনেক মন্ত্রিত্বেরই রদবদল হয়েছে। কিন্তু ওয়ালেসকে তাঁর পদ থেকে কখনওই সরানোর কথা ভাবা হয়নি। ফলে এখন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণায় বিস্মিত অনেকেই।
কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বরে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করবেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। আজ প্রকাশিত ব্রিটেনের একটি প্রথম সারির সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ালেস জানিয়েছেন, তিনি গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন, মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করার সময়ে যেন তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কেন এই সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে মন্ত্রী মুখ না খুললেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, সুনকের মন্ত্রিসভায় কাজ করতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কিন্তু এখন তিনি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। তাই এই সিদ্ধান্ত।
৫৩ বছর বয়সি ওয়ালেস পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান বলে দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন, এই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ ব্রিটিশ কূটনীতিকদের একাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রিটেনের অবস্থান প্রসঙ্গে নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওয়ালেস। যুদ্ধ এখনও থামেনি, বরং নেটোতে যোগ দেওয়া নিয়ে পশ্চিমি দুনিয়ার উপরে চাপ বাড়াচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। গত সপ্তাহেই ওয়ালেস মন্তব্য করেছিলেন, জ়েলেনস্কি আমেরিকা ও ইউরোপের কাছ থেকে যে সহায়তা পাচ্ছেন, তাতে তাঁর কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। সেই মন্তব্যের পরে প্রধানমন্ত্রী সুনক পাল্টা বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিলেন, ওয়ালেসের বিবৃতির সঙ্গে তিনি সহমত নন। তখনই প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতানৈক্য নিয়ে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য ইউক্রেনীয় ভাষায় টুইট করে ওয়ালেস জানান, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, যে ‘ওয়ার অ্যান্ড প্রেস্টন’ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়েন ওয়ালেস, আগামী নির্বাচনে, কিছু কেন্দ্রের সীমানার রদবদলের জন্য, সেটি আর থাকছে না। কনজ়ারভেটিভ নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী সুনকের কাছ থেকে তিনি নতুন কোনও কেন্দ্রে লড়তে চাইবেন না বলে সংবাদপত্রটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ওয়ালেস।
জনপ্রিয় কনজ়ারভেটিভ নেতা ওয়ালেস মন্ত্রিত্ব থেকে সরে গেলে এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনে না লড়লে তা দলেরই ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কনজ়ারভেটিভ দলের আর এক নেতা।