মা না বান্ধবী— বিপদে বাঁচাবেন কাকে, প্রশ্ন এল পরীক্ষায়

ভয়ানক আগুন লেগে গিয়েছে একটা বাড়িতে! দেখতে দেখতে দাউদাউ করে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন! আর, সেই আগুনের মাঝে আটকে গিয়েছেন আপনার মা আর বান্ধবী। কাকে বাঁচাবেন আপনি? শুনতে অবাক লাগলেও ঠিক এই প্রশ্নটাই দেখা গেল বেজিংয়ের এক আইন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৫:৫৬
Share:

ভয়ানক আগুন লেগে গিয়েছে একটা বাড়িতে! দেখতে দেখতে দাউদাউ করে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন! আর, সেই আগুনের মাঝে আটকে গিয়েছেন আপনার মা আর বান্ধবী। কাকে বাঁচাবেন আপনি? শুনতে অবাক লাগলেও ঠিক এই প্রশ্নটাই দেখা গেল বেজিংয়ের এক আইন পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। এও জানতে চাওয়া হল, ডিভোর্স হওয়ার আগে সেপারেশন পিরিয়ডে কোনও স্বামী যদি তাঁর স্ত্রীর প্রাণ না বাঁচান, তবে কি তাকে অপরাধ বলা যায়?

Advertisement

আর এমন সব প্রশ্নের প্যাঁচে পড়েই মাথা কুটে হন্যে হলেন হাজার হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবী এবং বিচারকরা! প্রশ্নটার সঠিক উত্তর দিতে না পারলে যে চিনে তাঁদের আইন অনুশীলনের রাস্তা বন্ধ!

আগুন সংক্রান্ত প্রশ্নটা আদতে ছিল এ রকম— একজন পুরুষ যদি এ রকম পরিস্থিতিতে তাঁর মাকে বাঁচাতে সক্ষম হলেও বেছে নেন বান্ধবীকে, তবে কি তাঁকে ‘ক্রাইম অব নন-অ্যাকশন’-এর দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা যায়?

Advertisement

শুধু এটাই নয়। বেজিংয়ের এই আইন পরীক্ষা অজস্র কূট প্রশ্নের জালে নাস্তানাবুদ করেছে পরীক্ষার্থীদের। যেমন, ভ্রান্তিমূলক অপরাধ হিসেবে কোনগুলোকে ধরা হবে আর কোনগুলোকে ধরা হবে না, তার তালিকাও ছিল রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো! ডিভোর্স চলাকালীন প্রশ্নটার কথা তো আগেই বলা হয়েছে। তার সঙ্গেই জানতে চাওয়া হয়েছে, আপ্রাণ চেষ্টা করেও লাইফগার্ড যদি জলে ডুবে যাওয়া কোনও শিশুকে বাঁচাতে না পারে, তবে কি সেটা আইনত অপরাধ? ধরা যাক, আপনি জানেন, আপনার বন্ধু একটা বিষ মেশানো কফি খাচ্ছে। তাঁকে বারণ না করাটা কি আইনত অপরাধের তালিকাভুক্ত হতে পারে?

পরীক্ষার্থীরা যা-ই লিখে আসুন না কেন এবং সাধারণ মানুষ যা-ই ভাবুন না কেন, সম্প্রতি চিনের আইন মন্ত্রক প্রশ্নগুলোর উত্তরপত্র প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মায়ের বদলে বান্ধবীকে বেছে নিলেই আইনের চোখে দোষী সাব্যস্ত হবেন সেই পুরুষ! কেন না, চিনের আইনে লেখা আছে, ছেলে সব সময়েই তার মায়ের প্রতি দায়বদ্ধ, বান্ধবীর প্রতি নয়।

তবে, আইন যা-ই বলুক না কেন, উত্তরপত্র প্রকাশ্যে আসার পরে বেশ শোরগোল শুরু হয়েছে চৈনিক সমাজে। বেশির ভাগ মানুষ বলছেন, ছেলে তো মায়ের প্রতি দায়বদ্ধ এমনিতেই হবে, তার জন্য আইন প্রণয়নের প্রয়োজন হবে কেন? মা ছেলেকে ছোট থেকে বড় করেন, সেই ঋণ তো আর কোনও পুরুষের বান্ধবীর প্রতি থাকে না! তা ছাড়া, বয়স কম হওয়ার দরুণ বান্ধবী প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা নিজেই করতে পারেন! বৃদ্ধা মায়ের পক্ষে সেটা সম্ভব নাও হতে পারে!

অন্য দিকে, বিপক্ষবাদীদের যুক্তিও ফেলে দেওয়ার মতো নয়! তাঁদের দাবি, আইনের চোখে সবার প্রাণের মূল্যই সমান হওয়া উচিত! আইনের কাজই তো সবাইকে সমান এবং ন্যায্য অধিকার দেওয়া। সে ক্ষেত্রে একজনের প্রাণ বাঁচালে সেটা অপরাধ নয়, অন্যের বাঁচালে অপরাধ— এমন আইনের কোনও মানে হয় না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement