নিহত আবু সাঈদ। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ছাত্র আবু সাঈদের পরিবারের হাতে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা তুলে দিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রংপুরের পীরগঞ্জের গিয়ে তাঁর মা-বাবার হাতে একটি চেক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন সাঈদ। গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের রবার বুলেটে নিহত হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর ঠিক আগে পুলিশবাহিনীর লাঠি-বন্দুকের সামনে দু’হাত ছড়িয়ে অকুতোভয় সঈদের সেই ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, পরবর্তী সময়ে ছাত্র আন্দোলন জোরদার করে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশের বন্দুকের নলের সামনে এমন বুক টান করে সাঈদের সেই প্রতিবাদের ছবি।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম সারির মুখ ছিলেন সাঈদ। ছিলেন, আন্দোলনকারী মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম ‘সমন্বয়ক’। তাঁর মৃত্যুর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ দাবি তুলেছিলেন, প্ররোচনা বা সংঘাতের পরিস্থিতি ছাড়াই সাঈদের উপর রবার বুলেট ছুড়েছিল পুলিশ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর শরিফুল ইসলাম শুক্রবার সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার পরে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’কে জানান, উপাচার্য হাসিবুর রশিদের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন সমিতি নিহত পড়ুয়ার পরিবারের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের আঁচ কিছুটা স্তিমিত হয়ে আসায় শনিবার ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৯ ঘণ্টা কার্ফু শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। শুক্রবার পর দ্বিতীয় দিন কার্ফু শিথিল করা হল ঢাকায়। শুক্রবার সরকারি হিসাবে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনে মোট ২০৯ জন নিহত হয়েছেন।