বারাক ওবামা। ছবি: রয়টার্স।
দু’ সপ্তাহও আর বাকি নেই। শেষ পর্বের নির্বাচনী প্রচার চলছে আমেরিকায়। এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর হয়ে গলা ফাটাতে মাঠে নামলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। নিজের উত্তরসূরিকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন বারাক ওবামা। এই নির্বাচনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘এটা রিয়্যালিটি শো নয়। এটাই রিয়্যালিটি।’’
এক সময়ে রিয়্যালিটি টিভি শো-য়ে সঞ্চালনা করেছেন ট্রাম্প। সেই প্রসঙ্গেই বর্তাম প্রেসিডেন্টকে খোঁচা দিয়েছেন ওবামা। গত কাল ফিলাডেলফিয়ার বেসবল স্টেডিয়ামের পার্কিং লটে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের সমর্থনে ওই সভায় অতিমারির আবহেও ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। এর আগে বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের সমর্থনে বিভিন্ন ফান্ড রেজিং অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে ওবামাকে। তবে বাইডেনের হয়ে এই প্রথম কোনও সভা কার্যত একা সামলালেন ওবামা। তা-ও প্রার্থী যেখানে নিজে অনুপস্থিত। ভোটের আগে শেষ বিতর্ক সভায় অংশ নেওয়ার জন্য ডেলাওয়্যারের বাড়িতে বসে বাইডেন প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিভৃতে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে কাল সরব হয়েছেন ওবামা। নিজের বক্তৃতার ছত্রে ছত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘ট্রাম্প আচমকা এসে আমাদের রক্ষা করবেন না। তাঁর কাছে তো নিজেকে রক্ষা করার মতো ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকু নেই।’’ বাইডেনের জেতা কেন প্রয়োজন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ওবামা। তাঁর কথায়, ‘‘বাইডেন জিতলে তিনি এমন প্রেসিডেন্ট হবে না যে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপমান করবেন আর সর্বদা কুকথা বলবেন। প্রতি পদে জেলে ভরার হুমকিও দেবে না উনি।’’ পরেই আমেরিকার ভোটারদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘এমন ভাবে ভোট দিতে হবে, যা আগে কখনও হয়নি। এ বারের নির্বাচন নিয়ে যেন কারও মনে কোনও সংশয়ই না-থাকে।’’
ট্রাম্পও অবশ্য চুপ থাকেননি। নিজের পূর্বসূরি এবং প্রাক্তন প্রতিদ্বন্দ্বীকে একসঙ্গে বিঁধেছেন তিনি। এক প্রচার সভাতেই প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘ওবামাই তো আগের বার ‘কুটিল’ হিলারির হয়ে সবচেয়ে বেশি গলা ফাটিয়েছিলেন না?’’
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় সময় আজ রাতেই শেষ বারের মতো মুখোমুখি হতে চলেছেন ট্রাম্প এবং বাইডেন। ন্যাশভিলের সেই বিতর্ক সভা হবে ৯০ মিনিটের। ছ’টি ভাগে ছ’টি ভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন দুই প্রার্থী। গত বারের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই প্রতি বিভাগে থাকছে দু’মিনিট করে সময়, যেখানে কেউ কারও কথায় বাধা দিতে পারবেন না। এক জন কথা বললে অপর জনের মাইক থাকবে মিউট করা। সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, জনসমর্থনে কিছুটা হলেও এগিয়ে বাইডেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্লরিডা, পেনসিলভ্যানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, অ্যারিজ়োনার মতো প্রদেশগুলি শেষ মুহূর্তে অনেক কিছু নির্ধারণ করতে চলেছে।