আনোয়ারুল আজিম। —ফাইল চিত্র।
ভারতে চিকিৎসার জন্য এসে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশের এক জন সাংসদ। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে গত তিন বার আওয়ামী লীগের টিকিটে জয়ী আনোয়ারুল আজিম ১২ মে, রবিবার কলকাতায় এসেছিলেন। ১৪ মে থেকে তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় সাংসদের সঙ্গে তাঁর বাংলাদেশের পরিবারের কোনও সম্পর্ক নেই। সাংসদের পরিবারের তরফে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে দিল্লি ও কলকাতার কূটনৈতিক ভবনে জানানোর পরে শনিবার থেকে তাঁরা খোঁজ খবর শুরু করেছেন। ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বিভাগকেও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত সাংসদ আজিমের কোনও খোঁজ মেলেনি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে খবর, সাংসদ নিয়মিত ভারতে চিকিৎসা করাতে আসতেন। কলকাতা তাঁর পরিচিত জায়গা। এখানে তাঁর কিছু জানাশোনা লোকও রয়েছেন। নিয়মিত যাতায়াতের কারণে বাংলাদেশের পাশাপাশি তিনি ভারতীয় একটি সিমকার্ডও ব্যবহার করেন। কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাস শনিবার থেকে সাংসদ আজিমের বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে। উপদূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, গত রবিবার ওই সাংসদ দর্শনা সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকেন। ওই দিনই তিনি ব্যারাকপুরে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। ১৪ মে, গত মঙ্গলবার তিনি বন্ধুর বাড়ি থেকে ‘দরকার আছে’ বলে কোথাও যান। জানিয়ে যান সে দিনই ফিরতে চেষ্টা করবেন, না হলে পরের দিন ফিরবেন। শনিবার পর্যন্ত আজিম না ফেরায় গোপাল বিশ্বাস ব্যারাকপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন। পুলিশকে গোপাল জানিয়েছেন, সেই থেকে তিনি সাংসদের দু’টি ফোনই বন্ধ পান। সঙ্গের মালপত্র তাঁর বাড়িতে রেখে কার্যত খালি হাতেই তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন।
সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস এ দিন সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দফতরে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাবার নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন। গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, সাংসদের দু’টো ফোন কখনও বন্ধ, কখনও খোলা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ভারতের পুলিশকেও সাংসদের সম্পর্কে তথ্য জানানো হয়েছে।
সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, ১২ তারিখ আজিম কলকাতায় পৌঁছনোর পরে ১৪ তারিখ পর্যন্ত তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ফোনে মেয়ে এবং পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ১৪ তারিখ থেকে আর কোনও সাড়া নেই। রউফ জানিয়েছেন— বৃহস্পতিবার, ১৬ মে সাংসদের নম্বর থেকে তাঁর ফোনে এক বার রিং হয়। তবে তিনি ধরার আগেই কলটি কেটে যায়। রউফ পাল্টা ফোন করে সাংসদ আজিমের ফোন বন্ধ পান।
খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪-এ জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কালীগঞ্জ উপজেলার সভাপতি আনোয়ারুল আজিম। এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় তিনি। পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ থাকায় অনেকেই আজিমের বাড়িতে এসে উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছেন।