Exercise and Weight Loss Relation

শরীরচর্চা নয়, খাদ্যাভ্যাসে বদলই আসল মন্ত্র! ওজন ঝরিয়ে রোগা হতে গেলে কী করবেন? নয়া দাবি

ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই আচমকা খাওয়াদাওয়া বন্ধ করছেন অনেকে। কেউ বা অল্প ফাঁকা সময় পেলে জিমে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন। কিন্তু তার পরেও অভিযোগ, ‘‘ওজন কমছে না আমার!’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৪
Share:
ওজন হ্রাসে কি শরীরচর্চা সব সময়ে কার্যকরী নয়?

ওজন হ্রাসে কি শরীরচর্চা সব সময়ে কার্যকরী নয়? ছবি: ফ্রিপিক।

জীবনের গতি যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে কাজের পরিমাণ। কাজের পরিমাণ বাড়ছে বলে বসে থাকার সময়ও বাড়ছে। যাঁদের কাজের সঙ্গে কায়িক শ্রমের সম্পর্ক নেই, তাঁরা আরও বেশি অচল হয়ে পড়ছেন। আর এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শরীরের মেদ এবং ওজন। আর সেটিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই আচমকা খাওয়াদাওয়া বন্ধ করছেন অনেকে। কেউ বা অল্প ফাঁকা সময় পেলে জিমে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন। কিন্তু তার পরেও অভিযোগ, ‘‘ওজন কমছে না আমার!’’

Advertisement

তা হলে গলদ কোথায়?

চারদিকে যখন শরীরচর্চার আরও নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কৃত হচ্ছে, তখনই ‘ফ্রিডম ফ্রম ডায়াবিটিস অ্যান্ড ওবেসিটি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং চিকিৎসক মালহার গানলার বক্তব্য, ‘‘আপনি যদি সত্যিই ওজন কমাতে চান, তা হলে শরীরচর্চা করা বন্ধ করুন।’’

Advertisement

সম্প্রতি তাঁর এই দাবি সাড়া ফেলে দিয়েছে চারদিকে। এত বছরের ধারণার বিপরীতে গিয়ে দাঁড়ালেন কেন মলহার? ট্রায়াথেলনের প্রশিক্ষক বলছেন, ‘‘জিমে হোক বা চারপাশে, এমন কত কত মানুষের সঙ্গে আমার রোজ দেখা হয়, যাঁরা প্রতি দিন কঠিন পরিশ্রম করেন, যাতে মেদ ঝরানো যায়। কিন্তু ছ’মাস পর দেখা হলে বলেন, এক গ্রামও ওজন কমল না! এর কারণ, ওজন কমাতে শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের ভূমিকা খুবই কম।’’

মালহার জানাচ্ছেন, তিনি আজ পর্যন্ত ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন এখনও পর্যন্ত। তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ কেবল শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন কমাতে পেরেছেন। কিন্তু বাকি বেশির ভাগ রোগীই (যাঁদের ওজন ৮০-১০০ কিলোর মধ্যে) ব্যর্থ। কারণ, তাঁদের মূল সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে খাদ্যাভ্যাস।

খাওয়াদাওয়ার ভুলের ফলে পেশিতে অতিরিক্ত মেদ জমতে থাকে। আর তাঁরা ভাবেন, শরীরচর্চা করলে সেই মেদ ঝরে যাবে সহজেই। কিন্তু শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ সেই মতো হয় না। ফলে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে না আনলে ওজন কমাতে পারবেন না বলেই জানালেন মালহার।

চিকিৎসক বলছেন, ওজন ঝরানোর মূলমন্ত্র হল, খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর দেওয়া। ওজন কমানোয় বাধা দেয় যে খাবারগুলি, সেগুলি সবার আগে তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। মেদ ঝরাতে সাহায্যকারী খাবারগুলি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দাবি, এক বার যদি সুষম আহারের ভিত তৈরি হয়ে যায়, তা হলে ছ’মাসের মধ্যে ১০-১৫ কিলো ওজন কমে যেতে পারে।

ওজন কমাতে শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের ভূমিকা কতখানি? ছবি: সংগৃহীত।

মালহারের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম পদক্ষেপে যদি আপনি সফল হন, তা হলে ব্যায়ামও ওজন হ্রাসের ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ দেবে। তবে, শুরুতেই কঠোর পরিশ্রম করলে চলবে না। ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে যেতে হবে লক্ষ্যের দিকে। ধরা যাক, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করার অভ্যাস দিয়ে শুরু করতে পারেন। এর পরের ধাপে হালকা যোগাসন করলে ভাল। নিয়ম মেনে এই দুই ধাপ পেরোতে পারলে তার পর অল্পস্বল্প শক্তিবৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

তিন ধাপে শরীরচর্চার মূল উদ্দেশ্য পেশিগুলিকে উদ্দীপিত করা। প্রথমে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তার পর ওজন হ্রাস, তার পর ধীরে ধীরে শক্তিবৃদ্ধির প্রশিক্ষণ।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও কয়েকটি ধাপ মেনে চলার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক।

১. যে ব্যক্তি খাওয়ার রুটিনে দিনে তিন বার বড় মিল নেন, তাঁকে প্রথমে তিন থেকে দুইয়ে নামতে হবে, ফের দুই থেকে একে।

২. ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে, এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

৩. ওজন হ্রাসের ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করতে পারে, এমন খাবার খেতে হবে।

৪. পেশিকে সক্রিয় রাখার জন্য হালকা শরীরচর্চা করতে হবে, কঠোর পরিশ্রম নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement