প্রতীকী ছবি।
দেশজুড়ে প্রতিবাদের মধ্যে অবশেষে রবিবার জেল থেকে বেরোতে পেরেছেন বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অঙ্ক ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল। তবে মামলা বা অভিযোগ মুক্ত হয়ে নয়, এই মুক্তি নেহাতই জামিন পেয়ে। স্কুলের ইলেকট্রিক মিস্ত্রির দায়ের করা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে ১৯ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে তাঁকে। একের পর এক জামিনের আবেদন এর আগে খারিজ হয়েছে আদালতে।
ধর্ম অবমাননার এই বহু পুরনো অস্বচ্ছ আইনটি বর্তমান সরকারের আমলেই ঝেড়েঝুড়ে কলি ফেরানো হয়েছে। তার পরে একের পর এক ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং বাউল-ফকিরের বিরুদ্ধে এই ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে— যে তাঁদের কথা কিংবা গানে ধর্মবিশ্বাস আহত হয়েছে। এর পরে অভিযুক্তদের আইনের মারপ্যাঁচে মাসের পর মাস তাঁদের জেলে ভরে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে অন্য কোনও আক্রোশ থেকে। যেমন এই শিক্ষক জেল থেকে বেরিয়ে অভিযোগ করেছেন, সম্ভবত টিউশন নিয়ে প্রতিযোগিতার ফলেই তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ সাজানো হয়েছে। শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা মণ্ডল জানিয়েছেন, স্বামী গ্রেফতার হওয়ার পরেও তাঁদের হুমকি দিয়ে সন্ত্রস্ত করা হয়েছে।
স্কুলটির দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান পড়ানোর সময়ে এক ছাত্র জানায়, এই বিষয়ে ধর্মের ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার বিপরীত। শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল সেই সময়ে জানান, ধর্মের ব্যাখ্যা যাই হোক, বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাই পরীক্ষিত সত্য। অভিযোগ, কোনও এক ছাত্র শিক্ষকের সেই কথা রেকর্ড করে বাইরে প্রচার করে। এর পরে এক দল মৌলবাদী স্কুলে এসে প্রধানশিক্ষকের কাছে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বরখাস্তের দাবি জানায়। সেই সময়ে স্কুলের ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ম অবমাননার লিখিত অভিযোগে বলেন, হৃদয় মণ্ডলের পড়ানো কানে যাওয়ায় তাঁর ধর্ম বিশ্বাস আহত হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ শিক্ষককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।