(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা। মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করল সে দেশের মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁর পাশাপাশি আরও ৯৬ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে যে গণ আন্দোলন হয়েছিল, সে সময় হত্যা এবং মানুষজনকে গুম করার অভিযোগে ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে ইউনূস সরকার। তাঁদের মধ্যে ২২ জনের বিরুদ্ধে মানুষকে গুম করার অভিযোগ রয়েছে। ৭৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মহম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার হাসিনা-সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছেন। সূত্রের খবর, হাসিনা ছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তারিক আহমেদ সিদ্দিকি, প্রাক্তন আইজিপি বেনজির আহমেদ, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের ডিরেক্টর জেনারেল জিয়াউল আহসান। গত বছর গণ আন্দোলনের জেরে ক্ষমতাচ্যুত হন হাসিনা। বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান তিনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণ আন্দোলনে নিহতদের তালিকা তৈরি করছে। প্রথম ধাপে ৮২৬ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই খুনের ঘটনাগুলির বিচার চলছে। ওই মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।
হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে অভিযোগ উঠেছে যে, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে বহু মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিশনও তৈরি করেছে ইউনূস সরকার। গত ডিসেম্বরে ওই কমিশন একটি অন্তর্বর্তী রিপোর্ট পেশ করেছে সরকারের কাছে। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হাসিনা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের নির্যাতন করেছে। সেখানে আরও দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন জনকে বাহিনীর সদস্যেরা তুলে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন আটকে রাখতেন, নির্যাতন করতেন। কাউকে কাউকে আট বছর পর্যন্ত বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি রিপোর্টে। কোনও কোনও বন্দিকে খুন করে দেহ নদীতে ফেলা হয়েছিল। কমিশনের দাবি, তারা ১,৬৭৬টি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়েছে। ৭৫৮ জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বার আন্দোলনকারীদের নির্যাতনে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাসিনা-সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হল।