ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের টহলদারি। —ফাইল চিত্র।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার ঘিরে বিতর্কের মাঝেই রবিবার ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে তলব করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এ দিন দুপুর তিনটে নাগাদ বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রকে প্রবেশ করতে দেখা যায় হাই কমিশনারকে। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে সে দেশের পররাষ্ট্রসচিব মুহাম্মদ জসীমউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, জসীমউদ্দিনের সঙ্গে কথা বলার পর প্রণয় জানান, কাঁটাতারের বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। সীমান্তে অপরাধদমনের ক্ষেত্রেও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করবে বলেও জানান তিনি। প্রণয় বলেন, “নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আমরা আশা করি, সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে সেই বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে।”
ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল কাঁটাতার বিহীন রয়ে গিয়েছে এখনও। সীমান্তরক্ষী বাহিনী উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা ২ হাজার ২১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে স্থল সীমান্ত রয়েছে ৯১৩.৩২৪ কিলোমিটার এবং জলসীমান্ত আছে ৩৬৩.৯৩০ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৫৩৮ কিলোমিটার এলাকায় কোনও কাঁটাতার নেই। অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে স্থলসীমান্ত রয়েছে ৯৩৬.৭০৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৭৫ কিলোমিটার অংশই কাঁটাতারহীন। গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ার অধীনে থাকা কোচবিহারে ১৭৭ কিমি সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১১০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত এবং প্রায় ৬৭ কিলোমিটার জল সীমান্ত। কোচবিহারে প্রায় ৫০ কিলোমিটার সীমান্ত কাঁটাতারহীন জায়গা। অর্থাৎ, প্রায় ৯৬৩ কিলোমিটার অংশই কাঁটাতার বিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
সম্প্রতি ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কিছু অঞ্চলে বিএসএফ কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু করে। তাতে বিজিবির তরফে আপত্তি জানানো হয়। মালদহের কালিয়াচকে এবং তার পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে কাঁটাতার বসানোর সময় বিজিবির বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই আবহে রবিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনা সারলেন ভারতীয় হাই কমিশনার। ‘প্রথম আলো’ অনুসারে জসীমউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর প্রণয় জানান, অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিত করার বিষয়ে ভারতের লক্ষ্যের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে। পাশাপাশি, চোরাচালান, অপরাধীদের আসা-যাওয়া এবং পাচারের চেষ্টা রোখার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে তাঁদের।