রোহিঙ্গা ফেরাতে দিল্লির সক্রিয়তা চান মোয়াজ্জেম

চিনও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

মেয়াদ শেষ হওয়ার মুখে দিল্লির উদ্দেশে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলির বার্তা— রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিক নয়াদিল্লি। কারণ ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তার স্বার্থও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত তার রাজনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা নিযে গোড়ার দিকে ততটা সক্রিয় হয়নি। কিন্তু আমরা নয়াদিল্লিকে অনুরোধ করেছি, বড় আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে মায়ানমারের উপর এই নিয়ে চাপ তৈরি করুন।’’ বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভারতই যে সব চেয়ে বেশি ত্রাণ পাঠিয়েছে, এ কথাও উল্লেখ করেছেন হাইকমিশনার। বলেছেন, ঢাকার অনুরোধ মেনে মায়ানমারকে বোঝানোর প্রশ্নে এখন তৎপর হয়েছে দিল্লি। সম্প্রতি আসিয়ান সম্মেলন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মায়ানমার নেতৃত্বকে রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তৎপর হওয়ার অনুরোধ করেছেন। বিষয়টি ঢাকার জন্য ইতিবাচক।

Advertisement

চিনও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছে। ভারতের মতো বড় আকারে না হলেও বেজিং-ও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে এবং মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে শরণার্থীদের জন্য বাড়ি বানিয়েছে। মোয়াজ্জেম আলির কথায়, ‘‘চিন আমাদের দ্বিপাক্ষিক ভাবে এই সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছে। প্রয়োজনে তারা সরকারি ভাবে সমস্ত রকম সহায়তা করতে প্রস্তুত।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ৬৮ হাজার বর্গমাইল সীমান্ত রয়েছে। ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কিন্তু গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এই রোহিঙ্গাদের সামাজিক ভাবে একঘরে করে রাখা হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব কিছুতেই প্রায় ৫০ বছর পিছিয়ে রয়েছে তারা। সহজেই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা রয়েছে। সীমান্তে এমন জনগোষ্ঠী নিয়ে বসবাস করা ভারতের জন্যও বিপজ্জনক।’’

নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বাংলাদেশেও চিনা বিনিয়োগ হু হু করে বাড়ছে। বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিষয়টির ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-চিন— এই দুই সম্পর্কের ব্যঞ্জনা একেবারেই আলাদা। চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মূলত বাণিজ্যিক। আমাদের অর্থনীতিতে টাকার জোগানের একটা বড় অংশ আসে চিন থেকে। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশের বহু কিছুই এক। একই দেশ ছিলাম আমরা। আবেগের সম্পর্ক রয়েছে আমাদের মধ্যে।’’

Advertisement

গত পাঁচ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে শীর্ষ সাফল্য স্থলসীমান্ত চুক্তি। কিন্তু মনমোহন সিংহের জমানা থেকে যা বকেয়া, তা হল তিস্তার জলচুক্তি। মোদীর নতুন দফায় কি এই চুক্তি সম্ভব হবে? আশাবাদী

বাংলাদেশের হাইকমিশনার। বলছেন, ‘‘এ কথা বলতে পারি, তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা পাবে। বাংলাদেশে তিস্তার পারে যে চারটি জেলা রয়েছে, তারা দেশের দরিদ্রতম। তিস্তার জল পেলে তাদের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement