পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পরে আদালতের নির্দেশে জেলে যেতে হল শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার বহিষ্কৃত সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকিকে। ধর্ম সম্পর্কে কিছু আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য টাঙ্গাইলের এই সাংসদদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। প্রায় দু’মাস ভারতে থাকার পরে রবিবার রাতের উড়ানে কলকাতা থেকে তিনি ঢাকায় ফেরেন।
আওয়ামি লিগের প্রভাবশালী নেতা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকি শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রিসভার ডাক ও টেলিযোগাযোগ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। আগের মন্ত্রিসভায় ছিলেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রকের দায়িত্বে। দায়িত্বজ্ঞানহীন ও লঘু মন্তব্যের জন্য আগেও বেশ কয়েক বার তিনি বিতর্কের মুখে পড়েছেন। গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন সফরে গিয়ে সেখানকার একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি হজ যাত্রা বিষয়ে এমন কিছু মন্তব্য করেন, যার ফলে বাংলাদেশের ইসলামি সংগঠনগুলি সমালোচনায় মুখর হয়। শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পরে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে তো সরানই, আওয়ামি লিগের প্রাথমিক সদস্যপদও কেড়ে নেন। বিপদ বুঝে কলকাতায় চলে যান কাদের সিদ্দিকির ভাই এই লতিফ সিদ্দিকি। এর পরে বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ৩০টি মামলা হয়। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ১২টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। বুধবারের মধ্যে তাঁকে গ্রেফতার করা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতর হরতালের হুমকি দিয়েছিল জামাতে ইসলামি ও অন্য ইসলামি সংগঠনগুলির সাধারণ মঞ্চ হেফাজতে ইসলামি।
সার্ক সম্মলনে যোগ দিতে এ দিন কাঠমান্ডু রওনা হন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তার পরেই ধানমন্ডি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন লতিফ সিদ্দিকি। কড়া পাহারায় পুলিশ তাঁকে আদালতে নিয়ে গেলে বিএনপি-পন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। লতিফকে লক্ষ্য করে জুতোও ছোড়া হয়। বিচারক তাঁকে জেল হেফাজত দেওয়ার পরে সাবেক এই মন্ত্রীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আর একপ্রস্ত নাটক হয়। ছোট পকেট দরজা দিয়ে মাথা নিচু করে জেলে ঢুকতে অসম্মত হন লতিফ সিদ্দিকি। সাংসদ হিসেবে সাধারণ কয়েদির থেকে বেশি সম্মান দাবি করেন তিনি। বিক্ষোভের মধ্যেই প্রায় ২০ মিনিট তিনি জেল গেটে দাঁড়িয়ে থাকেন। তার পরে জেল সুপার বাইরে এসে প্রধান ফটক খুলে তাঁকে ভেতরে নিয়ে যান।
লতিফ সিদ্দিকি আত্মসমর্পণের পরে হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছে হেফাজতে ইসলামি। তবে তাঁর ‘সঠিক’ বিচারের দাবিতে আরও আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।