বাগদাদের সেই হাসপাতাল। ছবি-ইন্টারনেট।
অকালেই ঝরে গেল ১২টি সদ্য ফোটা ফুল! চলে গেল ‘দেবতার গ্রাসে’- আগুনে!
বাগদাদের একটি হাসপাতালের মেটারনিটি ওয়ার্ডে বুধবার বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে গেল ১২টি সদ্যোজাত শিশু। কয়েক লহমায়।
পশ্চিম বাগদাদের ইয়ারমাউক হাসপাতালের অধিকর্তা সাদ হাতেম আহমেদ জানিয়েছেন, মেটারনিটি ওয়ার্ডে আগুন লাগে মঙ্গলবার প্রায় শেষ রাতে। ওই সময় ওয়ার্ডে থাকা ২৯ জন প্রসূতি আর ৮টি সদ্যোজাত শিশুকে অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু আগুন এত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিল, ১২টি সদ্যোজাত শিশুকে আর বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালটিকে সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, বহু বাবা বুধবার দিনভর হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, তাঁদের সদ্যোজাত শিশুর কোনও খোঁজ পাননি বলে। ধ্বংসস্তুপ আর পোড়া আসবাবপত্র সরিয়ে উদ্ধারকারী দল ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আরও মৃতদেহের সন্ধানে নেমেছেন।
কান্নায় ভেঙে পড়ে বছর তিরিশের নির্মাণ কর্মী হুসেন ওমর বললেন, ‘‘গত সপ্তাহেই আমার স্ত্রীর যমজ সন্তান হয়েছিল। দু’জনই মারা গিয়েছে। আমি আমার যমজ সন্তানদের ফেরত চাই। এটা তো হাসপাতালের অপদার্থতা। সরকার ফিরিয়ে দিক আমার যমজ সন্তানদের।’’
হাসপাতালের একেবারে নীচের তলায় মেটারনিটি ওয়ার্ডের এক প্রান্তে ছিলেন ৪১ বছর বয়সী এশরাক আহমেদ জাসার। মা হতে এসেছিলেন। কাল রাতে আগুন লাগার সময় তাঁকে অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এশরাক বলছিলেন, ‘‘রাতে ঘুমে দু’চোখ জড়িয়ে আসছিল। ওই সময় হঠাৎ শুনতে পাই হুড়োহুড়ির শব্দ। সবাই ভয়ে চিৎকার করছে। ‘আগুন’, ‘আগুন’ বলে ছুটছে সবাই, যে দিকে পারছে। তার পর আর কিছু মনে করতে পারছি না। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।’’
আরও পড়ুন- হাসপাতালে মানববোমা, নিহত ৭৫