প্রতীকী ছবি
কুমেরু অভিযানের সূত্রে এমনিতেই কার্যত কোয়রান্টিনে ছিলেন। অভিযান থেকে ফিরেও নিভৃতবাস শেষ হচ্ছে না বাঙালি পরিবেশবিজ্ঞানীর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী জানাচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৭ দিন এবং দিল্লিতে ১৪ দিনের কোয়রান্টিন পর্ব কাটিয়ে শনিবার কলকাতায় ফিরেছেন তিনি। এ বার আপাতত বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে তাঁকে।
গত ডিসেম্বরে ভারত সরকারের হয়ে ২৮ জন বিজ্ঞানীর একটি দল কুমেরু পাড়ি দিয়েছিল। কুমেরুর পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণাই ছিল লক্ষ্য। সেই কাজ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফেরার মুখেই শুরু হয় করোনার প্রকোপ। পুনর্বসু জানান, এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেপটাউনে পৌঁছন তাঁরা। সেখানে বন্দরে জাহাজেই দু’দিন আটকে থাকতে হয়। তার পরে সরকারি ডাক্তার পরীক্ষা করার পরে শহরে ঢোকার অনুমতি পান তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, ১৫ দিনের কোয়রান্টিন পর্ব কাটাতে হবে। কিন্তু সে দেশ থেকে ভারতীয়দের ফেরানোর কোনও বন্দোবস্ত না-থাকায় ৩৭ দিন আটকে থাকতে হয়। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সরকারি স্তরে আলোচনার পর ঠিক হয়, দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার ভারতে আটকে থাকা নাগরিকদের ফেরাতে যে বিমান পাঠাবে, তাতেই নিয়ে আসা হবে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের।
ভারতে আসার উড়ান ছিল জোহানেসবার্গ থেকে। এ দিকে কেপটাউন থেকে জোহানেসবার্গ আসার উড়ান নেই। পুনর্বসু জানাচ্ছেন, অগত্যা ভারতীয় দূতাবাসের বাসে চেপে দেড় হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় তাঁদের। ২০ মে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন পুনর্বসুরা। ২১ মে দিল্লিতে পৌঁছন। সেখানে একপ্রস্ত পরীক্ষার পর ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের নির্ধারিত কোয়রান্টিন কেন্দ্রে যান তাঁরা। কিন্তু দিল্লি পুলিশ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রক সেখানে থাকতে দেয়নি। তাদের নির্দেশ মতো অন্য একটি কেন্দ্রে যেতে হয়। সেখানে পরিচ্ছন্নতার অভাব ও খাবারের অব্যবস্থা ছিল বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে ই-মেল চালাচালির পরে দু’দিন বাদে একটি হোটেলে নিয়ে রাখা হয় তাঁদের। সেখানে ১২ দিন কাটিয়ে পুনর্বসু কলকাতায় ফেরেন শনিবার। বিমানবন্দরে মুচলেকা দিয়ে তিনি এখন দমদমে নিজের বাড়িতে বন্দি।
রবিবার জানান, দ্রুত শিক্ষকতায় ফিরতে চান। তাই আজ, সোমবার থেকেই অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করবেন। কবে ফের বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে নিজের প্রিয় ক্লাসঘরে ফিরবেন, রয়েছেন সেই অপেক্ষায়।