তথ্যচিত্রের ছবিগুলির মধ্যে একটি।—ছবি সংগৃহীত।
দক্ষিণ পোলান্ডের জার্মান অধিকৃত অঞ্চল আউশভিৎজ়ে ১৯৪৪ সালে নাৎসি শিবিরে নির্মম গণহত্যার ছবি ফ্রেমবন্দি করেছিলেন এক জার্মান ফোটোগ্রাফার। সেই বিরল ছবিগুলি নাৎসি শিবিরে ইহুদিদের কুখ্যাত গণহত্যার অন্যতম সাক্ষী। নতুন প্রজন্মের সামনে গণহত্যার সেই নির্মম ছবি তুলে ধরতে ৩৭টি সাদা-কালো ছবিকে প্রথম বার রঙিন করে একটি তথ্যচিত্রে ব্যবহার করা হল।
১৯৪০ থেকে ’৪৫ সালের মধ্যে ওই গণহত্যায় মারা গিয়েছিলেন ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষ। ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’ থেকে মুক্তির ৭৫তম বার্ষিকীর আগে ব্রিটিশ চ্যানেলের তরফে নির্মাণ করা হয়েছে ‘আউশভিৎজ় আনটোল্ড’ নামে এই তথ্যচিত্রটি। গত কাল, রবিবার, ব্রিটেনের একটি টিভি চ্যানেলে দেখানো হয় তথ্যচিত্রটি।
ছবির ওই অ্যালবামটির ৫৬ পাতায় রয়েছে ১৯৩টি ছবি। অ্যালবামটি পাওয়া গিয়েছিল লিলি জ্যাকব নামে এক মহিলার কাছ থেকে। ১৯৪৪ সালের মে মাসে লিলি ও তাঁর পরিজনকে আউশভিৎজ়ে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে পৌঁছতেই লিলির বাবা-মা ও পাঁচ ভাইকে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বেঁচে যায় কিশোরী লিলি।
কনসেনট্রেশন ক্যাম্পেই এক অপরিচিতের কোটের পকেট থেকে অ্যালবামটি পেয়েছিলেন লিলি। অ্যালবামে লেখা ছিল ছবিগুলি আউশভিৎ়়জ়ে এক জার্মান চিত্রগ্রাহকের তোলা। যুদ্ধশেষে মুক্তির পরে ওই অ্যালবামটি নিয়েই বিল্কে ফিরে যান তিনি। পরে নাৎসি বিষয়ক তথ্যসংগ্রাহক সার্জ ক্লার্সফিল্ডের অনুরোধেই ইজ়রায়েলের ওয়ার্ল্ড হলোকস্ট রিমেমব্র্যান্স সেন্টারে অ্যালবামটি জমা দেন লিলি।
সোমবার আউশভিৎজ় থেকে থেকে মুক্তির ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে সোমবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পোলান্ডের আউৎশভিৎজ় শহরে জমায়েত করলেন হলোকস্ট থেকে বেঁচে ফেরা ২০০-রও বেশি প্রবীণ। সবার পরনে তৎকালীন বন্দিদশার সেই কুখ্যাত নীল-সাদা ডোরাকাটা পোশাক। নিহতদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পাশাপাশি এখনও বিশ্বের নানা প্রান্তে যে ভাবে ইহুদিবিদ্বেষ থেকে গিয়েছে, তার বিরুদ্ধেও সুর চড়ান তাঁরা। পোলান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ় দুদার নেতৃত্বেই আউৎশভিৎজ় স্মৃতির দেওয়ালে ফুল-মালা দেন প্রবীণেরা। ৯২ বছরের ডেভিড মার্কসের কথায়, ‘‘চল্লিশের দশকের সেই নির্মম ইহুদি-নিধনের কথা আগামী প্রজন্মকে জানাতেই আমাদের এই পথে নামা।’’