Pakistan

করাচিতে যাত্রী-বিমান ভেঙে মৃত অন্তত ৭৩

করাচির জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের খুব কাছেই, ঘনবসতিপূর্ণ জিন্না গার্ডেন এলাকার একটি আবাসনের উপরে ভেঙে পড়ে বিমানটি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০২:৪৪
Share:

ধ্বংসস্তূপ: রাস্তায় পড়ে রয়েছে ভাঙা বিমান। শুক্রবার করাচির জিন্না গার্ডেন এলাকায়। এএফপি

করোনা পরিস্থিতির জেরে দু’মাস বন্ধ থাকার পরে গত শনিবার থেকে কিছু অন্তর্দেশীয় যাত্রী-বিমান চালু হয়েছিল পাকিস্তানে। সপ্তাহ ঘোরার আগেই বিপর্যয়। আজ দুপুরে লাহৌর থেকে উড়ে করাচি বিমানবন্দরে নামার মিনিটখানেক আগে ভেঙে পড়ল পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-র একটি এয়ারবাস এ৩২০। বিমানটিতে ছিলেন ৯১ জন যাত্রী ও ৮ বিমানকর্মী। এই ৯৯ জনের মধ্যে মাত্র দু’জন বিমানযাত্রী প্রাণে বেঁচেছেন বলে গভীর রাতের খবর।

Advertisement

এখনও পর্যন্ত ৭৩টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। করাচির জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের খুব কাছেই, ঘনবসতিপূর্ণ জিন্না গার্ডেন এলাকার একটি আবাসনের উপরে ভেঙে পড়ে বিমানটি। তাই মৃত ও আহতদের মধ্যে কত জন বিমানে ছিলেন ও কত জন ওই বাড়িগুলির বাসিন্দা, তা স্পষ্ট নয়। পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার এই ‘পিকে-৮৩০৩’ উড়ানে ছিলেন সে দেশের ব্যাঙ্ক অব পঞ্জাবের প্রেসিডেন্ট জ়াফর মাসুদ এবং বর্ষীয়ান টিভি সাংবাদিক আনসার নকভি। মাসুদ বেঁচে গেলেও নকভির খবর নেই। পাক বিমান মন্ত্রকের যুগ্মসচিব সাত্তার খোকর আবার বলেন, ৯৯ জন যাত্রী ও ৮ বিমানকর্মী ছিলেন বিমানে। তবে ৯১ জন যাত্রীর নামই সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে।

বিমানের ক্যাপ্টেন ছিলেন সাজ্জাদ গুল। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৩৭ মিনিটে বিমানটির সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পিআইএ-র চেয়ারম্যান আর্শাদ মালিক জানান, পাইলট যান্ত্রিক গোলযোগের কথা বলায় এটিসি তাঁকে জানায়, দু’টি রানওয়ে তৈরি রয়েছে। পাইলট এক বার চক্কর কাটতে যান। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। এটিসি-র সঙ্গে সর্বশেষ কথোপকথনে শোনা গিয়েছে, পাইলট বলছেন, ‘‘দু’টো ইঞ্জিনই বিকল।’’ আবার পাক বিমানমন্ত্রী গুলাম সারওয়ারের বক্তব্য, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার অকেজো হয়ে গিয়েছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, বিমানের ডানায় আগুন জ্বলছিল। বিমানটি ভেঙে পড়ার আগে কয়েকটি বাড়ির ছাদে ভেঙে পড়ে ডানা। তবে পিআইএ বলেছে, কোথায় গোলযোগ, তা এখনই বোঝা সম্ভব নয়।

Advertisement

শেষ কথা...

পাইলট: পিকে ৮৩০৩ অ্যাপ্রোচ

এটিসি: জি স্যর

পাইলট: বাঁ দিকে বাঁক নিই?

এটিসি: কনফার্মড

পাইলট: এগোচ্ছি। আমাদের দু’টো ইঞ্জিনই অকেজো।

এটিসি: আপনি বেলি ল্যান্ডিং করবেন কি না নিশ্চিত জানান।

পাইলট: (অস্পষ্ট)

এটিসি: রানওয়ে টু-ফাইভ তৈরি।

পাইলট: রজার

পাইলট: স্যর, মে-ডে, মে-ডে, মে-ডে। পাকিস্তান ৮৩০৩।

এটিসি: রজার স্যর। দু’টো রানওয়েই তৈরি আছে।
(এখানেই কথোপকথন শেষ)

পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, অবিলম্বে তদন্ত শুরু হয়েছে। শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনেকের প্রশ্ন, দীর্ঘদিন না-উড়লে কি বিমানে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিতে পারে? কারণ, ভারতেও মাস দুয়েক বন্ধ থাকার পরে ২৫ মে থেকে ফের উড়ান চালু হবে। বিশেষজ্ঞদের আশ্বাস, ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-র নজরদারি অত্যন্ত কঠোর। প্রত্যেক সপ্তাহে বিমানগুলিকে পরীক্ষা করে ডিজিসিএ-কে শংসাপত্র পাঠাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। কোনও বিমান ওড়ার যোগ্য কি না, শংসাপত্র যাচাই করে একমাত্র ডিজিসিএ সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কাজেই আশঙ্কার কারণ নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement