আশরফ গনি এবং হাসমত গনি।
আশরফ গনির ভাই হাসমত গনি তালিবান সমর্থক নন। তিনি কেবল তাঁদের মেনে নিয়েছেন। কারণ মেনে না নিয়ে উপায় নেই! তাঁর একটি ভিডিয়ো এবং টুইট ঘিরে বিতর্কের মধ্যেই জানালেন হাসমত।
যে ভিডিয়োটির জন্য হাসমত খবরে, তাতে দেখা গিয়েছিল এক তালিবান নেতা তাঁর কপালে চুম্বন করছেন। তালিবানের সঙ্গে তাঁর এই প্রকাশ্য ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ নৈতিকতার প্রসঙ্গ টেনে জানতে চেয়েছিলেন, যে তালিবদের ভয়ে আশরফ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, সেই তালিব নেতাদের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের ওঠাবসা ন্যায়সঙ্গত কি? এক ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসমত সেই বিতর্কের জবাব দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তালিবানকে মেনে নিয়েছি। ওদের সমর্থন করিনি। সমর্থন খুব জোরালো একটা শব্দ। আর তা ছাড়া মেনে নেওয়া এবং সমর্থন করা বিষয় দু’টিও সম্পূর্ণ আলাদা।’’
আফগানিস্তানের কোটিপতি ব্যবসায়ী হাসমত। উচ্চবিত্ত সমাজের প্রতিনিধিও। বরাবরই দেশের শাসনতন্ত্রের পরিবর্তনপন্থী হাসমত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দাদা আশরফের মতো পালিয়ে যাননি, তার কারণ তিনি আফগানিস্তানে থেকে পরিবর্তনে সাহায্য করতে চেয়েছেন। তিনি মনে করেন, তালিবদের ভয়ে সাধারণ মানুষের মতো ব্যবসায়ীরাও পালিয়ে গেলে দেশের অর্থনীতি ধসে পড়বে। আর তা যদি হয়, তবে তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হবে দুঃসাধ্য।
শনিবার বিকেলে একটি টুইটে হাসমত লিখেছিলেন, ‘‘তালিবানই পারে আফগানিস্তানকে কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা দিতে।’’ তালিবদের সাহায্য করতে শিক্ষিত সমাজ এবং ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার বার্তাও দিয়েছিলেন হাসমত। তাঁর সেই টুইট নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়। হাসমত অবশ্য বলছেন, তিনি যা বলতে চেয়েছেন, তা অনেকেই বুঝতে পারেননি। তাঁর ব্যাখ্যা, তালিবানের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা আছে। কিন্তু শুধু নিরাপত্তা দিয়ে দেশ চলে না। তাই দেশের শাসনে তালিবদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসা উচিত শিক্ষিত তরুণ সমাজের। বদলে টুইটটিকে তালিবানের প্রতি হাসমতের প্রচ্ছন্ন সমর্থন বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
হাসমতের মতে, পরিবর্তন মেনে নেওয়াই আফগানিস্তানের এই পরিবর্তনের একমাত্র সমাধান। দেশে থেকেই বদল আনার চেষ্টা করতে হবে। এমনকি অন্যান্য দেশকেও এই বদল মেনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাসমত। সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ভারত এখন অপেক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের নীতি নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তালিবানের সঙ্গেই রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে নয়াদিল্লিকে।
তবে আশরফের দেশ ছাড়া প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে হাসমত বলেছেন, তিনি মনে করেন না আশরফ দেশের টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। প্রসঙ্গত, আশরফের বিরুদ্ধে এক সময় তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর ভাই হাসমত।