স্যাম অল্টম্যান। ছবি: রয়টার্স।
ওপেনএআই সংস্থার সিইও পদ থেকে সরানো হল কৃত্রিম মেধা চ্যাটজিপিটি-র ‘স্রষ্টা’ স্যাম অল্টম্যানকে। সংস্থার তরফে শুক্রবার এই ঘোষণা করা হয়েছে। ওপেনএআই ‘স্যামের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার উপর আস্থা হারানোর’ কারণেই তাঁকে পদ থেকে ছাঁটাই করা হল বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। আপাতত অল্টম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন সংস্থারই উচ্চপদস্থ কর্তা মিরা মুরাটি। পরে স্থায়ী ভাবে সংস্থার সিইও নিয়োগ করা হবে।
ওপেনএআই-এর তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘অল্টম্যানকে নিয়ে অনেক পর্যালোচনার পর সংস্থার বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অল্টম্যান বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে যোগাযোগ বজায় রাখেননি। এটি তাঁর দায়িত্ব ছিল। কিন্তু তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।’’
বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়েছে, ‘‘স্যাম যে ওপেনএআই-এর নেতৃত্ব দিতে পারবেন, সে বিষয়ে তাঁর উপর আস্থা হারিয়েছে বোর্ড।’’
কৃত্রিম মেধা চ্যাটজিপিটি তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল অল্টম্যানেরই। তাঁকেই চ্যাটজিপিটি-র স্রষ্টা হিসাবে চেনে সারা বিশ্ব। সেই অল্টম্যানকেই সংস্থার সিইও পদ থেকে সরাল ওপেনএআই।
সিইও পদ খোয়ানোর পর অল্টম্যান ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে গিয়ে লেখেন, “ওপেনএআই-এ আমি যে সময় কাটিয়েছি, তা ভাল ছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমার জীবনে এই সিদ্ধান্ত অনেক বদল আনবে। আশা করি বিশ্বেরও কিছুটা পরিবর্তন হবে। ওপেনএআই-এ আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে প্রতিভাবান মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে। পরবর্তী কালে আমি কী করব, তা নিয়ে পরে বলব।”
ওপেনএআই-এ যোগ দেওয়ার আগে অল্টম্যান ‘ওয়াই কম্বিনেটর’ নামে এক সংস্থার মাথায় ছিলেন। বিনিয়োগকারী হিসাবেও দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে চলেছেন তিনি। ২০১৫ সালে আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক, লিঙ্কডইনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান এবং আরও কয়েক জনকে সঙ্গে নিয়ে ‘ওপেনএআই’ নামে একটি কৃত্রিম মেধা গবেষণা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন স্যাম। স্যাম সেই সময় দাবি করেন, এআই ব্যবহার করে মানব জাতির উপকার করা এই সংস্থা তৈরির মূল লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, চ্যাটজিপিটি আত্মপ্রকাশের পর থেকেই তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিভিন্ন মহল। কৃত্রিম মেধার কারণে বহু মানুষ চাকরি হারাতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। সম্প্রতি ভারতে অভিনেত্রী রশ্মিকা মন্দানা, ক্যাটরিনা কাইফ এবং কাজলের ‘ডিপফেক’ ছবি এবং ভিডিয়ো নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার নেপথ্যেও রয়েছে চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম মেধা। গত মাসে হলিউড অভিনেতা টম হ্যাঙ্কসও তাঁর অনুগামীদের ডিপফেক ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।