আর্জেন্টিনার ভাবী প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই। ছবি: রয়টার্স।
অর্থনীতির নিরিখে দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ আর্জেন্টিনায় রাজনৈতিক পালাবদল। লিওনেল মেসি-দিয়েগো মারাদোনার দেশে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন দক্ষিণপন্থী নেতা জাভিয়ের মিলেই। রবিবার আর্জেন্টিনায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে ফল ঘোষিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৯৭.৬ শতাংশ। তার মধ্যে মিলেই পেয়েছেন ৫৫.৮ শতাংশ ভোট। মিলেইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী তথা দেশের বিদায়ী পরিবেশমন্ত্রী সের্জিও মাসা পেয়েছেন ৪৪.২ শতাংশ ভোট।
১৯৮৩ সালে ফের গণতন্ত্রের রাস্তা ধরে পথচলা শুরু করার পর আর্জেন্টিনায় আর কোনও প্রেসিডেন্ট এত বিপুল ব্যবধানে জয়ী হননি। নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই আর্জেন্টিনার শাসকদল ‘পেরোনিস্ট পার্টি’র প্রার্থী মাসা ভাবী প্রেসিডেন্ট মিলেইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছাবার্তায় মাসা লিখেছেন, “আর্জেন্টিনা অন্য পথ বেছে নিল।”
রাজনীতিতে প্রায় নবাগত মিলেই ‘উগ্র দক্ষিণপন্থী’ হিসাবেই আর্জেন্টিনার রাজনীতিতে পরিচিত। বহু প্রচারসভায় তিনি নিজেকে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেছেন। ভোটপ্রচারে বেরিয়ে বহু বার মিলেইয়ের মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মাসা। তা সত্ত্বেও মিলেইয়ের এই জয়ের কারণ হিসাবে অর্থনীতিকেই সর্বাগ্রে রাখছেন সে দেশের ভোট পর্যবেক্ষকদের একটি বড় অংশ। আর্জেন্টিনায় মুদ্রাস্ফীতির হার ১৪০ শতাংশের উপর। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা আর্জেন্টাইনদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
ভোটপ্রচারে বেরিয়ে মিলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি ক্ষমতায় এলে সরকারের ব্যয় কমিয়ে দেবেন এবং মুদ্রাস্ফীতিতে লাগাম টানবেন। মিলেই বিরোধীদের অবশ্য আশঙ্কা, আর্জেন্টিনার ভাবী প্রেসিডেন্ট স্বাস্থ্য কিংবা শিক্ষার মতো জরুরি ক্ষেত্রে সরকারি অর্থবরাদ্দে রাশ টানতে পারেন। মিলেইয়ের জয় স্পষ্ট হতেই আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনাস এয়ার্সে উৎসব শুরু করে দেন তাঁর সমর্থকেরা। এক ভোটারের কথায়, “মানুষ পরিবর্তন চাইছিল। আমরা মনে করি মিলেই সেই যোগ্য মানুষ, যিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।”