ফাইল চিত্র।
সেনা-বিরোধী বড়সড় মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। আজ সকালে মোনিওয়া শহরে সেই প্রতিবাদ মিছিল শুরুর আগেই পুলিশ গ্রেফতার করল মায়ানমারের অন্যতম সেনা-বিরোধী নেতা ওয়াই মোয়ে নাইংকে। তাঁকে গ্রেফতার করে কোথায় রাখা হয়েছে তা বলতে পারছেন না নাইংয়ের দলের লোকজন।
উইন জ়াও খিয়াং নামে প্রতিবাদী সংগঠনের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মোটরবাইক মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য নাইং যখন যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁর বাইকে ধাক্কা মারে পুলিশের একটি গাড়ি। তার পরে কোনও অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে নাইংকে। সেনা অভ্যুত্থান-পরবর্তী মায়ানমারে জুন্টা-বিরোধিতার অন্যতম মুখ ছিলেন বছর পঁচিশের এই মুসলিম যুবক। তাঁর গ্রেফতারির পরে সেনা-বিরোধী আন্দোলন বড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত মোনিওয়া শহরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা লাগাতার বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন নাইং-ই। তবে নাইংয়ের গ্রেফতারি নিয়ে আজ মুখ খোলেননি সেনার কোনও মুখপাত্র।
আর এক শহর মান্দালয়ে আজ প্রতিবাদরত স্বাস্থ্য কর্মীদের উপরে গুলি চালিয়েছে সেনা। সেখানে মারা গিয়েছেন এক জন বিক্ষোভকারী। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলি দাবি, ইতিমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে থেকে সেনা-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। আজ বিনা প্ররোচনায় স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই প্রতিবাদ মিছিলে সেনা গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আগেই গাড়ি ভর্তি সেনা এসে এক জনকে গুলি করে মারে। ওই প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘মনে হচ্ছিল ওরা (সেনা) যেন নির্দিষ্ট কাউকে খুঁজছে।’’
তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানাচ্ছে, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় জনজাতি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে মৃত্যু হচ্ছে সেনা-পুলিশেরও। গত মাসেই সেনা-বিরোধী বিক্ষোভে দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই জনজাতি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির নেতারা। গত কয়েক দিনে উত্তরে কাচিন ও পূর্বে কারেন জনজাতি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে প্রচুর সেনার। তবে সেই সংখ্যা খোলসা করেনি জুন্টা।