লজ্জা: আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আঁচ পড়ল গাঁধী-মূর্তিতেও। ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর একটি ব্রোঞ্জের মূর্তিতে ভাঙচুর চালাল এক দল দুষ্কৃতী। মূর্তিটির গায়ে আঁকা হয়েছে, লেপা হয়েছে স্প্রে পেন্টও। ছবি: টুইটার
বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী বিক্ষোভের আগুনে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পুড়ছে মার্টিন লুথার কিংয়ের দেশ। সেই ক্ষোভের আঁচ লাগল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর একটি মূর্তিতেও।
ঘটনা বুধবার ভোররাতের। ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে রাখা গাঁধীর সেই মূর্তিতে ভাঙচুর চালায় এক দল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। স্প্রে পেন্ট করে দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তিটির গায়ে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুরু হয়েছে তদন্ত। মার্কিন রাজধানী-শহরে যে কয়েক জন বিশ্বনেতার মূর্তি রয়েছে, তার মধ্যে গাঁধীর এই ব্রোঞ্জ মূর্তিটি অন্যতম।
গত ২৫ মে পুলিশি হেফাজতে আফ্রো-মার্কিন যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকেই আমেরিকার প্রায় তিনশোরও বেশি শহরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছিল। যা কোনও কোনও জায়গায় হিংস্র হয়ে ওঠে। অনেক শহরেই রাতের অন্ধকারে চলেছে অবাধ লুটপাট। তবে এই সময়ে অহিংস আন্দোলনের প্রতীক গাঁধীর মূর্তিটিকে কেন নিশানা করা হল, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশও। গোটা ঘটনার জন্য ইতিমধ্যেই ক্ষমা চেয়েছেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার। ভারতীয়দের প্রতি আজ এক টুইট-বার্তায় তিনি বলেছেন, “ওয়াশিংটনে গাঁধী মূর্তিটিতে যে ভাবে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, তা পীড়াদায়ক। আমরা আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।”
গত কয়েক দিনের তুলনায় শহরে শহরে বিক্ষোভের আঁচ কিছুটা হলেও কমেছে। আগামী শনিবার নর্থ ক্যারোলাইনায় তাঁর জন্মস্থানে সমাধিস্থ করা হবে ফ্লয়েডকে। আজ মিনিয়াপোলিসে তাঁর স্মরণসভায় যোগ দেন প্রচুর মানুষ। এ দিকে, ফ্লয়েড হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের বিরুদ্ধে প্রথমে থার্ড ডিগ্রি হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও গত কাল তাঁর বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মামলা আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ৪০ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে শ্বেতাঙ্গ এই অফিসারের। তাঁর সঙ্গে আরও তিন অফিসারের বিরুদ্ধেও মামলা শুরু হয়েছে। এ দিকে ফ্লয়েডের দেহ ময়না-তদন্ত করে জানা গিয়েছে, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত ছিলেন তিনি।রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনার মিশেল বাশেলে গত কালই পরোক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনকে বার্তা দিয়ে বলেছেন, “নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা বন্ধ করার যে আহ্বান বিক্ষোভকারীরা দিচ্ছেন, তা এ বার শোনা উচিত।” প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তব্য, “আসল পরিবর্তনের সময় এসে গিয়েছে।” প্রথম সারির মার্কিন দৈনিকে লেখক সলমন রুশদি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিঁধে লিখেছেন, “বহু স্বৈরাচারী শাসকের উত্থান-পতন দেখেছি আমি। আমেরিকা, সাবধান।”
আরও পড়ুন: প্রবাদপ্রতিম নিরাপত্তার বিজ্ঞাপনকে ভুল প্রমাণ করে দুর্ঘটনা ঘটাল স্বয়ংক্রিয় গাড়ি