দলীয় বৈঠকে যোগ দেওয়ার পথে ম্যার্কেল। সোমবার বার্লিনে। ছবি রয়টার্স।
এ এক বিরল নির্বাচন। সাম্প্রতিক অতীতে এ ধরনের উত্তেজক ভোটযুদ্ধের সাক্ষী থাকেননি জার্মানরা। ভোটদান শেষের ২৪ ঘণ্টা পরেও স্পষ্ট নয় মসনদের দখল নেবে কারা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি (এসডিপি) এবং ক্রিশ্চান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) অব জার্মানি... যুযুধান দু’পক্ষই দাবি করেছে তারাই সামলাবে শাসনভার।
আজ সকালে ভোট গণনার শুরু থেকেই ওলাফ সোজ়ের এসডিপি এগিয়ে। ২৫ থেকে ২৬ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার। অন্য দিকে সিডিইউ-সিএসইউ জোটের পক্ষে গিয়েছে ২৪ শতাংশ ভোট। তৃতীয় স্থানে গ্রিন পার্টি (১৪ শতাংশ)।
চ্যান্সেলর পদে এসপিডি-র প্রার্থী ওলাফ সোজ় অবশ্য আশাবাদী শেষ হাসি হাসবেন তাঁরাই। কিন্তু কিছুটা পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়তে নারাজ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দলের চ্যান্সেলর প্রার্থী আর্মিন লাসেট। উভয় পক্ষেরই দাবি জোট গড়ে বড়দিনের আগেই সরকার গড়বেন তাঁরা। তাই গ্রিন পার্টি ও এফডিপি পার্টি (১১.৫ শতাংশ ভোট)-র সঙ্গে যোগ রাখছেন দু’পক্ষই। এফডিপি নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার সিডিইউ-সিএসইউ জোটের সঙ্গে থাকারই আভাস দিয়েছেন। সঙ্গে গ্রিন পার্টিও যোগ দিতে পারে বলে ইঙ্গিত। কিন্তু এসডিপি-র সঙ্গে গ্রিন পার্টির জোটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। তবে ম্যার্কেল জমানার মতো প্রথম দুই দলের জোট এ বার কোনও মতেই সম্ভব নয় বলে পূর্বাভাস বিশ্লেষকদের। সিডিপি-র সোজ়ের কথায়, ‘‘মানুষ সরকারে পরিবর্তন চাইছেন। ভোটের ফলাফলেও তারই ইঙ্গিত রয়েছে।’’
তবে সরকারে যারাই আসুক, একটা বিষয়ে একমত সকলেই— ১৬ বছর চ্যান্সেলর থাকার পরেও ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তা টাল খায়নি এতটুকুও। আপাতত রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ম্যার্কেল। তবে এখনও খাতায় কলমে তিনি চ্যান্সেলর, যতক্ষণ না নতুন সরকার গঠন হচ্ছে। গত কয়েক দিন দলীয় প্রার্থী লাসেটকে জেতাতে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন ম্যার্কেল। এ বার বাড়িতেই সময় কাটাতে চান তিনি। সময় দিতে চান রান্নাঘরে। প্লাম কেক কিংবা সুপ তৈরিতেই মনোনিবেশ করতে চান তিনি। পড়তে চান বইও। গত জুলাইয়ে আমেরিকা সফরে ম্যার্কেলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল কী ভাবে অবসর যাপন করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি? সেই সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক ভাবে কিছু দিন অখণ্ড অবসরে থাকতে চান। এই সময়টা বাড়িতেই থাকতে চান বলে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন। রান্নার পাশাপাশি সময় দিতে চান বই পড়ায়। ম্যার্কেলের সহাস্য মন্তব্য, ‘‘বই পড়তে পড়তে এক সময়ে হয়তো ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়েই পড়ব।’’