কমলা হ্যারিস। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জো বাইডেন। ডেমোক্র্যাট শিবিরের নতুন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে তিনি প্রস্তাব করেছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নাম। যদিও দলের তরফে এখনও পর্যন্ত সিলমোহর পড়েনি, তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলার ‘দেশের বাড়ি’ তামিলনাড়ুর তুলাসেন্দ্রপুরমে বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে উচ্ছ্বাস। বাইডেনের সরে দাঁড়ানো ও কমলার নাম প্রস্তাব হতেই ওয়াশিংটন থেকে প্রায় ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরের এই প্রত্যন্ত গ্রাম কোমর বাঁধছে আসন্ন ‘উৎসবের’ জন্য।
আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার দাদুর জন্ম এই গ্রামে। কমলার যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন এক বার এই গ্রামে এসেছিলেন তিনি। দাদুর হাত ধরে ঘুরেছেন চেন্নাইয়ের সমুদ্র সৈকতেও। যদিও আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি আর এই গ্রামে পা রাখেননি। ২০২১ সালে যখন কমলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হন, তখন গ্রামে দেখা গিয়েছিল উৎসবের মেজাজ। যেন ‘অকাল দীপাবলি’। আতসবাজি ফেটেছিল। জায়গায় জায়গায় পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল। কমলার ছবি দেওয়া ক্যালেন্ডার, চকোলেট বিলি হয়েছিল।
গ্রাম কমিটির সদস্য কে কালিয়াপুরুমল সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যদি কমলা নির্বাচনে জিতে যান এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হন, তা হলে আরও বড় করে উদ্যাপন করা হবে। তেলাসুন্দ্রপুরমের এক দোকানদার জানান, গ্রামবাসীরা আশায় ছিলেন হয়তো তিনি এক বার (ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর) গ্রামে আসবেন কিংবা কোনও বিবৃতিতে হয়তো একবার গ্রামের কথা উল্লেখ করবেন। কিন্তু ওই দোকানদারের হতাশা, এ রকম কিছুই হয়নি এত দিনে। তিনি জানান, কমলা যখন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হন, তখন বিলি করা ক্যালেন্ডার গ্রামের অনেক বাড়িতেই এখন আর ঝোলানো নেই। এ বার যখন কমলা প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে, তখন আবার সেই ক্যালেন্ডার বাড়িতে বাড়িতে দেখা যাবে বলে মনে করছেন ওই দোকানদার।
গ্রামবাসীদের একাংশের মনে আক্ষেপ, অভিমান থাকলেও তেলাসুন্দ্রপুরম গ্রামের মন্দিরের পুরোহিত এস ভি রমনন বলছেন, “১৯৩০-এর দশকে তাঁদের পরিবার এখান থেকে চলে গিয়েছিল। ফলে তাঁকে ঘিরে গ্রামে যে উৎসাহ-উন্মাদনা, সেটা কমলার না বোঝারই কথা। এটা অনেকটা ঘোড়ার দৌড়ে গলা ফাটানোর মতো। যে ঘোড়া জিতছে, সেই ঘোড়া জানেই না আপনি তাঁর জন্য গলা ফাটাচ্ছেন।”