হংকং-এ ডিসেম্বরের শেষের দিকে ওমিক্রন সংক্রমণের প্রথম খোঁজ মেলে। তার পর থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকতে করোনাভাইরাসের এই রূপ। শুক্রবার পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন ওমিক্রনে।
হাসপাতালের বাইরে রোগীদের ভিড় ছবি রয়টার্স
বিশ্ব যখন তৃতীয় স্ফীতির দাপট কাটিয়ে ফের স্বাভাবিক হচ্ছে, খুলছে অফিস, কারখানা, দোকানপাট তখন অন্য ছবি হংকং-এ । সে দেশে রোগীর ভিড়ে কম পড়ছে হাসপাতাল। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ফের লকডাউনের পথে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
হংকং-এ ডিসেম্বরের শেষের দিকে ওমিক্রন সংক্রমণের প্রথম খোঁজ মেলে। তার পর থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকতে করোনাভাইরাসের এই রূপ। শুক্রবার পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন ওমিক্রনে। এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে মাত্র দু’মাসের মধ্যে। গত দু’টি কোভিড স্ফীতিতে হংকং-এ মোট ১২ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন।
ডিসেম্বর মাসে ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়ার পর থেকে প্রশাসন দ্রুত কড়া কোভিড বিধি জারি করে। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় উড়ানে। বিধি-নিষেধ জারি করা হয় জমায়েত-অনুষ্ঠানে। কিন্তু তাতেও সংক্রমণকে কামানো যায়নি। ওমিক্রন আক্রান্তরা ভিড় করছেন হাসপাতালের দরজায়। কোভিডের মৃদু উপসর্গ দেখা দিলেন তারা পৌঁছে যাচ্ছেন হাসপাতালে। ভর্তির জন্য লম্বা লাইনও পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেশ কয়েকটি মেগা হাসপাতাল তৈরির।
কিন্তু কেন হাসপাতালে মৃদু উপসর্গ থাকলেই ভিড় করছেন রোগীরা? এর পিছনে শহর প্রশাসনের আগের একটি সিদ্ধান্তের দিকেই আঙুল তুলছেন অনেকে। কারণ প্রথম স্ফীতির পর তারা সিদ্ধান্ত নেয়, কোভিডের মৃদু উপসর্গ থাকলেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। কোনও নিভৃতবাসের বিধি রাখা হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতি সরকার সিদ্ধান্ত বদল করলেও আগের বিধি মেনে কোভিডের উপসর্গ দেখা দিলেই হাসপাতালে ছুটছেন অনেকে। ফলে ভিড় বাড়াছে হাসপাতালগুলোতে।
তবে কোভিড সংক্রমণ বাড়ার পিছনে রাজনীতি রয়েছে বলেও অনেকের মত। কারণ হংকং দীর্ঘদিন ধরে মূল ভূখণ্ডের ‘জিরো-কোভিড’ নীতি মেনে চলে। চিন শহরব্যাপী লকডাউন, গণ হারে করোনা পরীক্ষা এবং ধাপে ধাপে সরকারি তদারকির মাধ্যমে অতিমারি দূর করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু হংকং প্রশাসন শুধুমাত্র সীমান্ত বন্ধ করে ‘জিরো-কোভিড’ নীতিতে অনড় হয়ে বসেছিল। এর ফলে তারা করোনা পরীক্ষা, টিকা প্রদানের মতো কোনও কর্মসূচি নেয়নি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন যে এই দেওয়াল চিরকাল ধরে থাকবে না। তৃতীয় স্ফীতিতে তাদের সেই সর্তক বার্তা সত্যি হয়েছে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাড়ে সাত কোটি বাসিন্দাদের করোনা পরীক্ষা করার জন্য সরকার নির্দিষ্ট ‘পরিকল্পনা তৈরি’ করছে।