গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এ কথা জানিয়েছেন। ফাওয়াদের ওই ঘোষণার পরেই নতুন করে ইমরানের ইস্তফা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় পাক পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা। তার আগেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন ইমরান।
ইমরানের দল ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই)-এর একটি সূত্র জানাচ্ছে, জাতীর উদ্দেশে ভাষণেই পদত্যাগের কথা ঘোষণা করতে পারেন পাক প্রধানমন্ত্রী। যদিও ইমরানের ইস্তফার সম্ভাবনা নাকচ করে পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেছেন, ‘‘আমাদের ক্যাপ্টেন শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালাবেন।’’
পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর নেতা শাহবাজ শরিফ বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ইমরান প্রস্তাব দিয়েছেন, আমরা যদি অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিই, তবে তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন করে ভোটে যাবেন।’’ এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে পাক জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইমরান।
সোমবার পাক পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিশেষ অধিবেশনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে বিরোধী দলনেতা শাহবাজের নেতৃত্বে সম্মিলিত বিরোধী পক্ষ। কিন্তু সেই প্রস্তাব ঘিরে বিতর্কের আগেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সভা মুলতুবি ঘোষণা করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাক সংবিধান অনুযায়ী ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা পেশের সাত দিনের মধ্যে ভোটাভুটি বাধ্যতামূলক। ইমরান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার (৩ এপ্রিল) আস্থা ভোটের মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতিতে স্পষ্ট, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে গরিষ্ঠতা হারিয়েছেন ইমরান। পাক সেনার তরফেও তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার ‘বার্তা’ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় ইমরানের সঙ্গে পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার বৈঠকের পরে সেই জল্পনা আরও জোরাল হয়েছে।
৩৪২ আসনের পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ‘জাদু সংখ্যা’ ১৭২। ইমরানের দল পিটিআই)-এর সদস্য ১৫৫ জন। কিন্তু পিটিআই-এর বেশ কয়েক জন পার্লামেন্ট সদস্য ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ইমরানের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ইমরান সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি)-এর ৭, বালুচিস্তান আওয়ামি পার্টি (বিএপি)-র ৫ এবং জামহুরি ওয়াতন পার্টির রয়েছেন ১ জন সদস্য রয়েছেন।
অন্য দিকে তিন প্রধান বিরোধী দল, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর ৮৪, পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র ৫৬ এবং মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল (এমএমএ)-র ১৫ জন সদস্য রয়েছেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে।