রাফা ছাড়ছেন প্যালেস্টাইনিরা। ছবি: রয়টার্স।
গাজ়া ভূখণ্ডের দক্ষিণে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের শেষ ঠিকানা রাফা শহর দখলের লক্ষ্যে চূড়ান্ত পর্যায়ের স্থল অভিযান শুরু করল ইজ়রায়েলি সেনা। পূর্ব এবং পশ্চিমে গাজ়ার অন্য অংশের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী সড়ক-সহ রাফার অর্ধেক এলাকা ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলি সেনা ঘিরে ফেলেছে বলে তেল আভিবের দাবি।
পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ইজ়রায়েলি বোমা এবং গোলাবর্ষণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে রাফা শহরের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে লক্ষাধিক সাধারণ প্যালেস্টাইনি নাগরিক পালিয়ে গিয়েছেন। মিশর সীমান্তবর্তী মরু এলাকায় অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, খাদ্য এবং পানীয়ের অভাবে তাঁদের প্রাণসংশয় হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার তরফে শুক্রবার আবার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ইজ়রায়েলকে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কার্বির মন্তব্য, ‘‘এ ধরনের সামরিক পদক্ষেপ হামাসের হাতই শক্ত করবে। আমেরিকার নয়।’’ গত সাত মাস ধরে উত্তর এবং মধ্য গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলার জেরে ঘরছাড়া ১০ লক্ষেরও বেশি সাধারণ প্যালেস্টাইনি নাগরিকের ঠিকানা এখন রাফার বিভিন্ন শরণার্থী শিবির। সেখানে লড়াই শুরু হলে বহু সাধারণ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার নানা দেশ যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছিল ইজ়রায়েলের কাছে। একই পরামর্শ দিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনও। কিন্তু সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে গত ৬ মে থেকে গাজ়া ভূখণ্ডের দক্ষিণে রাফায় প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের শেষ ঠিকানায় স্থলপথে হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা।
রাফায় সেনা অভিযানের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই তেল আভিবকে অস্ত্র এবং গোলাবারুদের সরবরাহ মুলতুবি করার কথা ঘোষণা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যদিও শুক্রবার ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘‘আমরা নিজেদের জোরেই লড়তে পারি। ইজ়রায়েল কারও উপর নির্ভরশীল নয়।’’ যুদ্ধের আবহের মধ্যেই নেতানিয়াহুর সেনা প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের রাফা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।